ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৬ হাজার ৬৯ কোটি টাকার বাজেট সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন করা হয়েছে। বুধবার গুলশান-২ এর নগরভবনে অনুষ্ঠিত ডিএনসিসির সপ্তম করপোরেশন সভায় এ বাজেট পাস হয়।
ডিএনসিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এবারের বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা, যা মোট বাজেট আয়ের ৬০ শতাংশ। ব্যয়ের পরিমাণও নির্ধারণ করা হয়েছে সমপরিমাণ অর্থাৎ ৬ হাজার ৬৯ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে ৪ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে উন্নয়ন খাতে, যা মোট বাজেটের প্রায় ৭৬ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সড়ক ও অবকাঠামো উন্নয়নে—মোট ২ হাজার ৩২ কোটি টাকা, যা বাজেটের ৩৩ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ ৪৩৬ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে, যা বাজেটের ৮ শতাংশ।
মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৮৭ দশমিক ৭৫ কোটি টাকা—মোট বাজেটের ৩ শতাংশ।
ডিএনসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও পারিশ্রমিক বাবদ বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২৫৭ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৪ শতাংশ। রাজস্ব আয়ের মধ্যে হোল্ডিং ট্যাক্স, পরিচ্ছন্নতা, লাইটিং ও স্বাস্থ্য খাত থেকে ৪৫ শতাংশ সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে।
এছাড়া সম্পত্তি হস্তান্তর খাত থেকে ১ হাজার ৮০ কোটি টাকা বা প্রায় ৩০ শতাংশ আয়ের আশা করা হয়েছে। বাকি অর্থ সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা ও অনুদানের মাধ্যমে সংগ্রহের লক্ষ্য রয়েছে।
সভায় ওয়ার্ড পর্যায়ের প্রশাসনিক কাঠামো সংস্কারের অংশ হিসেবে ‘ওয়ার্ড সচিব’ পদবির নাম পরিবর্তন করে ‘ওয়ার্ড সুপারভাইজার’, ‘ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর’ অথবা ‘ওয়ার্ড অর্গানাইজার’ নামকরণের প্রস্তাব গৃহীত হয়। এটি প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।
সভায় ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, “রাজস্ব আদায়ের উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা নিঃসন্দেহে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত।”
তিনি জানান, ব্যয়ের ক্ষেত্রে নতুন সৃষ্ট ১৮টি ওয়ার্ডের উন্নয়নকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ডিএনসিসি বর্তমানে রাজধানীর উত্তরাঞ্চলের ৫৪টি ওয়ার্ডে সেবা দিয়ে আসছে। জনসংখ্যার চাপ, নগরায়ন ও নাগরিক সেবার প্রসার বাড়ায় প্রতি বছর বাজেটেও বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে অবকাঠামো, বর্জ্য ও মশক নিয়ন্ত্রণে।