প্রয়োজনীয় বিচার ও কাঠামোগত সংস্কার সম্পন্ন হলে ২০২৬ সালের এপ্রিলে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে আপত্তি থাকবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। শুক্রবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্বাচনের সময় ঘোষণা করার পর, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে এ প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।
সারজিস লিখেছেন,”জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ এবং মার্চের মধ্যে দৃশ্যমান বিচার ও প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কারগুলো সম্পন্ন হলে এপ্রিলে নির্বাচনে কোনো আপত্তি থাকবে না।”
তিনি বলেন, “একটি স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নির্বাচন কমিশন এবং বিচারবিভাগকে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকতে হবে। এসব প্রতিষ্ঠান যেন ক্ষমতার দ্বারা প্রভাবিত না হয়, সেজন্য স্পষ্ট অবস্থান ও আস্থা অর্জনের প্রয়োজন আছে।”
সারজিস আলম আরও যোগ করেন, “এক যুগের অবৈধ নির্বাচন ও জুলাই অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে এবারকার নির্বাচন যেন ক্ষমতার অপব্যবহার, কালো টাকার ছড়াছড়ি ও পেশিশক্তির প্রদর্শনের মঞ্চে পরিণত না হয়—এই নিশ্চয়তা থাকতে হবে। বড়-ছোট সকল রাজনৈতিক দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি না হলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।”
এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেন, “বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনসংক্রান্ত চলমান সংস্কার কার্যক্রম পর্যালোচনা করে আমি আজ দেশবাসীর কাছে ঘোষণা করছি যে, আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে অনুষ্ঠিত হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, নির্বাচনের বিস্তারিত রোডম্যাপ যথাসময়ে নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করবে।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ মন্তব্য করেন, নির্বাচনের যে সময় ঘোষণা করেছেন তাতে জাতির আশা পূরণ হয়নি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ আরো বলেন, “৫০ এরও অধিক দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। সরকার চাইলে সর্বোচ্চ জানুয়ারি মধ্যে নির্বাচন দিতে পারত, তবে যেটা করা হয়নি।”
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এবারের নির্বাচনকে ঘিরে দেশের রাজনীতিতে এক নতুন মাত্রা তৈরি হয়েছে। একদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রচেষ্টা, অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সময়সীমা ও সমতার দাবি—সব মিলিয়ে আগামী কয়েক মাস হতে যাচ্ছে দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।