মোহাম্মদ মাসুদ মজুমদার:
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা, রাষ্ট্রদূত (অব.) জনাব সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের জীবনে শান্তি, সম্প্রীতি, উন্নয়ন ও অগ্রগতির অভিযাত্রা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আজ ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার অফিস কক্ষে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা’র সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার মিজ সারা কুক (Ms. Sarah Cooke) এক সৌজন্য সাক্ষাৎকালে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এসব কথা বলেন।

বিশেষ এ সাক্ষাতে উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) জনাব সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, বর্তমান সরকার দেশে আধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা বিস্তারে অধিকতর গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে এখন কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ সরকার পার্বত্য অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনাকে আরও সহজতর করতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম তৈরি, স্যাটেলাইট পদ্ধতিতে দূরশিক্ষণ প্রদান, এবং প্রত্যন্ত এলাকায় ছাত্রছাত্রীদের থাকা ও পড়াশুনা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাওয়ার জন্য হোস্টেল বিল্ডিং নির্মাণে প্র্র্রকল্প গ্রহণ করছে।
উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) জনাব সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন যে, অনেকগুলো বছর পার হয়ে গেলো, সে অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ দেশের মূল ধারার সাথে এখনো পুরোপুরি সম্পৃক্ত হতে পারেনি। তিনি বলেন, আমাদের সরকার এ বিষয়টিকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছে এবং সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, আমরা নিরাপত্তার বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছি। সত্যিকার অর্থে পার্বত্য অঞ্চলে তেমন বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। তদুপরি বিদেশিদের নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা অত্যন্ত সচেতন আছি। পার্বত্য চট্টগ্রামে সকলের নির্ভয়ে অবাধ চলাচল, ঘোরাফিরা অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, এ বছরের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝিতে কয়েকজন রাষ্ট্রদূত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভ্রমণ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করে গেছেন। এবারের ঈদ, পুঁজা পার্বনে বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার পর্যটক পার্বত্য চট্টগ্রামে বেড়াতে এসেছেন, তাদের থাকার জন্য বিকল্পভাবে ব্যবস্থাও করতে হয়েছে। কোনো সমস্যা তো হয়নি। বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করেই আমরা বিদেশিদের চলাচলের প্রতি বিশেষ খেয়াল রেখে থাকি। তার অর্থ এই নয় যে, পার্বত্য অঞ্চল একটি উত্তপ্ত এলাকা এখানে মানুষের চলাচল একেবারেই নেই। উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, দেশে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হউক এ পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যেই বাংলাদেশ সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
উভয়ের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারকরণ, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের প্রসঙ্গগুলো ওঠে আসে। বাংলাদেশের উন্নয়নে ব্রিটিশ সরকারের বরাবরের ন্যায় সহযোগিতা থাকবে এ আশাবাদ ব্যক্ত করে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ সরকার কাজ করছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে ব্রিটিশ সরকার সবসময়ই পাশে ছিল এবং আগামিতেও থাকবে। তিনি এজন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ ব্যক্ত করেন।
ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাই কমিশনার মিজ সারা কুক (Ms. Sarah Cooke)-এর সাথে আলোচনাকালে এসময় অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল খালেক, অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার মহোত্তম এনডিসি, যুগ্মসচিব কংকন চাকমা, উপদেষ্টার একান্ত সচিব (উপসচিব) খন্দকার মুশফিকুর রহমান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টার এপিএস (সিনিয়র সহকারী সচিব) শুভাশিষ চাকমা, ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাই কমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি পলিটিক্যাল মিজ এ্যালি বুট (Ms Ellie Boot)সহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।