সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশের বাইরে গমনকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিতর্কে এবার উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ সরকার। গত ৭ মে রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে তিনি দেশত্যাগ করেন, যা জানাজানির পর বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন এবং সমালোচনার ঝড় তোলে।
সরকার ইতোমধ্যে এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে চারজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। পাশাপাশি, ঘটনার গভীরে গিয়ে পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধানের জন্য গঠিত হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।
রোববার (১১ মে) গঠিত এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরারকে। সদস্য হিসেবে রয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং নৌপরিবহন ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
কমিটি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে। তদন্তে দেশত্যাগের প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অনিয়ম, দায়িত্বে গাফিলতি বা আইনি ব্যত্যয় ঘটেছে কিনা—তা চিহ্নিত করা হবে। এছাড়া, কারা কর্তব্যে অবহেলা করেছেন, তারা কাদের অনুমতি বা সহায়তায় তা করেছেন এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ করবে কমিটি।
তদন্তের স্বার্থে কমিটি যেকোনো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, প্রযুক্তি, সাক্ষ্য বা ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার চাইতে পারবে এবং সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা তা দিতে বাধ্য থাকবে। প্রয়োজনে কমিটি অতিরিক্ত সদস্যও অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। কমিটিকে সব ধরনের প্রশাসনিক ও কারিগরি সহায়তা দেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।
আবদুল হামিদের এই বিদেশ গমনের ঘটনাটি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের প্রশ্নে এক গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা আগামী দিনগুলোতে সাবেক রাষ্ট্রপতিদের চলাফেরায় নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।