২০০৯ সালের পিলখানা ট্র্যাজেডির ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় আজ আরও ৪০ জন আসামিকে জামিন দিয়েছেন আদালত। এর আগে একই ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলায় তাঁরা খালাস পেয়েছিলেন।
আজ সোমবার (১২ মে) কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালতের বিচারক ইব্রাহীম মিয়া এই আদেশ দেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম।
এর আগেও হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া ১৭৮ জনের জামিন মঞ্জুর হয়েছিল বিস্ফোরক আইনের মামলায়। নতুন করে আরও ৪০ জনের জামিনে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২১৮ জনে। আইনজীবী আমিনুল ইসলাম জানান, হত্যা মামলায় ২৭৮ জন খালাস পেলেও রাষ্ট্রপক্ষ ৬৯ জনের রায় চ্যালেঞ্জ করে। এর মধ্যে ২০ জনের খালাস বাতিল হয়। ফলে উচ্চ ও নিম্ন আদালত মিলিয়ে প্রায় ২৫০ জনের বেশি ব্যক্তি এখন খালাসপ্রাপ্ত হিসেবে গণ্য।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে সংঘটিত হয় দেশের ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ বিদ্রোহ। বিডিআরের বিপথগামী সদস্যরা প্রায় দুই দিন ধরে চালায় নির্মম হত্যাকাণ্ড, যাতে প্রাণ হারান ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন। এ ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ২০১৩ সালে রায় দেন বিচারিক আদালত, যেখানে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।
হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শেষে ২০২০ সালে প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে, ১৮৫ জনের যাবজ্জীবন হয় এবং ২৮৩ জন খালাস পান। এ পর্যন্ত মামলার আসামিদের মধ্যে ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া বিচারাধীন রয়েছে বিস্ফোরক আইনে করা আরেকটি মামলা, যেখানে এখনো চলছে সাক্ষ্যগ্রহণ। এই মামলায় সাক্ষী রয়েছেন ১,৩৪৪ জন। আর পিলখানা হত্যার রায়ের আপিল শুনানি এখন অপেক্ষায় রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে, যেখানে ২২৬ জন আসামির পক্ষে এবং রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ৮৩ জনের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করা হয়েছে।