রাখাইনে সংঘাত ও দুর্ভিক্ষের আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিতে নতুন করে রোহিঙ্গা আগমন ঠেকাতে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করেছে বাংলাদেশ। আজ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান স্পষ্টভাবে বলেন, “বাংলাদেশের পক্ষে আর বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়।”
তিনি বলেন, “রাখাইনের সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ রোহিঙ্গাদের আবারও বাংলাদেশে ঠেলে দিতে পারে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ১২ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
মানবিক সহায়তার বিষয়ে তিনি জানান, এখনো কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি হয়নি। সহায়তা প্রদানের আগে কিছু মৌলিক শর্ত পূরণ জরুরি, যেমন— সহায়তা প্রদানকারী ও গ্রহীতাদের নিরাপদ প্রবেশাধিকার, সহায়তার অপব্যবহার রোধ, সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার না হওয়া এবং সংঘর্ষের স্থগিতাদেশ।
তিনি জানান, রাখাইনে স্থিতিশীলতা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য সহায়ক হবে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ আরাকান বাহিনীর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ রাখছে। কারণ, সীমান্তে শান্তি রক্ষা এবং রাখাইনে অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার স্বার্থে রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্তি জরুরি।
খলিলুর রহমান বলেন, “আরাকান বাহিনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছে— তারা রোহিঙ্গাদের সমাজ ও শাসন কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত করবে। এই প্রতিশ্রুতিতে তাদের অবিচল থাকতে হবে। না হলে এটি আন্তর্জাতিকভাবে জাতিগত নিধনের পরিচায়ক হিসেবে বিবেচিত হবে, যা বাংলাদেশ মেনে নেবে না।”
সংকট সমাধানে বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট— “মানবিক সহায়তা প্রদান অবশ্যই নিরপেক্ষ, নিরাপদ এবং সংঘর্ষমুক্ত হতে হবে,” বলে জানান উপদেষ্টা। এছাড়া, আঞ্চলিক দেশগুলোরও এই সংকটে সম্মিলিতভাবে দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।