সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিলের দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো উত্তাল হয়ে উঠেছে সচিবালয় এলাকা। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সকাল থেকেই নিরাপত্তাবলয় উপেক্ষা করে সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের পাশে বাদামতলায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের স্লোগানে মুখরিত হয় সচিবালয় চত্বর—“লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে”, “মানি না মানবো না, অবৈধ কালো আইন”, “এক হও, লড়াই কর” ইত্যাদি স্লোগানে বিক্ষোভ জানান দিচ্ছে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের।
বিক্ষোভ সামাল দিতে সরকার অবশেষে একটি সচিব কমিটি গঠন করেছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদকে প্রধান করে ৮ সদস্যের এই কমিটি মঙ্গলবার গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আন্দোলনরতদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে এই কমিটি। তবে বৈঠক কবে হবে, সে বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কিছু জানানো হয়নি। বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো চেয়ারম্যান বাদিউল কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কর্মচারীরা বলছেন, ২০২৫ সালের সংশোধিত অধ্যাদেশটি ‘নিবর্তনমূলক’ এবং ‘অবৈধ কালাকানুন’। তাদের দাবি, এটি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে, না হলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে। তারা উল্লেখ করেন, ১৯৭৯ সালের সরকারি চাকরির বিশেষ বিধান ইতোমধ্যে দেশের সর্বোচ্চ আদালত বাতিল করেছে, সেই বাতিল বিধানকে নতুনভাবে প্রণয়ন করা মানেই প্রশাসনে বিভ্রান্তি ও দমননীতির পথ প্রশস্ত করা।
এ অবস্থায় সচিবালয়ে দর্শনার্থী প্রবেশ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে, গণমাধ্যমকর্মীদেরও প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে। গেটগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি, দাবি না মানা হলে প্রয়োজনে আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। তাদের ভাষায়, এই লড়াই কেবল একটি অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে নয়—এটি তাদের অধিকার, সম্মান ও পেশাগত মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন।