স্টাফ রিপোর্টার:
দেশে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিতর্ক অবসান হয়নি। ১৯৯৪ সালে সরকারি তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৮৬ হাজার। অথচ ২০২৪ সালে এসে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ৫০ জনে। এর মধ্যে অন্তত ৯০ হাজার মুক্তিযোদ্ধার সনদ ভুয়া বলে ধারণা করছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)।
বর্তমানে একজন মুক্তিযোদ্ধা বছরে ভাতা পান সর্বনিম্ন ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। সেই হিসেবে, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিবছর সরকারের প্রায় ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ অবস্থায়, এসব ভুয়া সনদধারীকে চিহ্নিত করতে জামুকা মাঠ পর্যায়ে শুনানি কার্যক্রম শুরু করেছে।
শুনানির প্রথম ধাপ শুরু হচ্ছে আজ (২ জুন) কুমিল্লা সার্কিট হাউজে, যেখানে ৩১ জনের বিরুদ্ধে ভুয়া সনদের অভিযোগে শুনানি হবে। সকাল ১০টা থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
জামুকার মহাপরিচালক শাহিনা খাতুন বলেন, “একজন মুক্তিযোদ্ধা আসল না ভুয়া, তা কাগজ দেখে বা ঢাকায় বসে নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। এজন্য মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাই শুরু করেছি। সাক্ষ্য-প্রমাণ ও সংশ্লিষ্ট সময়ের প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ইতোমধ্যে বয়স সীমার বাইরে থাকায় ২ হাজার ১১১ জনের সনদ বাতিল হয়েছে। বিগত ১৫ বছরে বাতিল হওয়া গেজেটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৯২৬টি। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা কোটা ব্যবহার করে সরকারি চাকরি পাওয়া ব্যক্তির সংখ্যা ৮৯ হাজার ২৩৫ জন।
উল্লেখ্য, জুলাই আন্দোলনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক দায়িত্ব নেওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা তালিকা যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশ দেন। এরপর দেশজুড়ে হাজার হাজার অভিযোগ জমা পড়ে। সেসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুরু হয়েছে এই মাঠ পর্যায়ের শুনানি।
জামুকা জানিয়েছে, কুমিল্লার পর দেশের অন্যান্য জেলাতেও ধাপে ধাপে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে এবং ভুয়া সনদধারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।