স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা:
“জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিটি মুহুর্তে রাজপথে ছিলাম, ছাত্র-সন্তানদের পাশে দাঁড়িয়েছি, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আজ তারই প্রতিদান হিসেবে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো!” — বললেন বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের (বিএমসি) সহকারী অধ্যাপক ডাঃ ফারজানা মাকসুদ।
শনিবার (১৭ মে) সকালে ধানমণ্ডিস্থ বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হলরুমে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, ১৫ মে ২০২৫ তারিখে বিএমএসআরআই এর অনারারি সেক্রেটারি মেজর জেনারেল (অব.) মোঃ রফিকুল ইসলামের সই করা এক অফিস আদেশে ডাঃ ফারজানাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর প্রতিবাদ জানিয়ে ডাঃ ফারজানা বলেন, “আমার অপরাধ আমি সত্য কথা বলেছি। বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী মাজহারুল ইসলাম দোলনের ব্যক্তিগত আক্রোশে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অথচ তিনিই বারবার আওয়ামী দোসরদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন।”
তিনি আরও হুঁশিয়ার করে বলেন, “আমার বরখাস্ত আদেশ যদি প্রত্যাহার না করা হয়, তাহলে আমি কঠোর কর্মসূচির দিকে যাবো। প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দুর্নীতির মুখোশ উন্মোচন করবো, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার নিকট স্মারকলিপি দেবো।”
‘আমার শরীর থেকে এখনও রক্তের দাগ শুকায়নি’— এমন মন্তব্য করে তিনি বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে ‘নৈতিকতা বিবর্জিত’ বলে উল্লেখ করেন।
এ সময় ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের সভাপতি মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার বলেন, “স্বৈরাচারী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আমরা ডাঃ ফারজানার পাশে আছি এবং প্রয়োজনে রাজপথে আন্দোলনে নামবো।”
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, ডাঃ রুকনুজ্জামান রুবেল, ডাঃ মুর্তাজা যাকিউল আবরার এবং মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিক্ষার্থীরা।
ডাঃ ফারজানা মাকসুদ ২০১০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। তিনি এমবিবিএস ও এমফিল (অ্যানাটমি) ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এছাড়া ২০২৩ সালে তিনি ‘Conventional Frontal Air Sinus Imaging in Personal Identification among Adult Bangladeshi’ শীর্ষক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন।