মোস্তাফিজুর রহমান, গাইবান্ধা (সাঘাটা, ফুলছড়ি): গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় বাদিয়াখালি আর এন্ড এইচ হাফানিয়া সড়কের ১৩ হাজার ৫৫০ মিটার চেইনের বটতলা এলাকায় এলজিইডির ২ কোটি ১২ লক্ষ ৮২ হাজার ৮০২ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ২০ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজে পুরাতন রড ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দেন এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন।

গাইবান্ধার বাদিয়াখালী থেকে সাঘাটা উপজেলার প্রাণকেন্দ্র বোনারপাড়া হয়ে বটতলা বাজার থেকে বরকোনা বাজার ও জুমারবাড়ী হয়ে সোনাতলা উপজেলার মাধ্যমে বগুড়ার সংযোগ সড়ক সম্প্রসারণ প্রায় শেষের দিকে। এই সড়ক সম্প্রসারণের ফলে পূর্বের সরু ব্রিজের পরিবর্তে নতুন ব্রিজ নির্মাণের কাজ দেওয়া হয় মেসার্স বসুন্ধরা হাউস বিস্ফীস এন্ড দোয়েল এন্টারপ্রাইজকে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি নতুন রডের পরিবর্তে পুরাতন রড মিশিয়ে ব্রিজ নির্মাণ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় যুবক নুর আলম জানান, “আমরা লক্ষ্য করেছি, ব্রিজ নির্মাণে পুরাতন রড ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই, সরকার নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী ব্রিজটি নির্মাণ করা হোক।”
বটতলা বাজারের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, “ঠিকাদার যেন আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার না করতে পারে, তাই আমরা নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছি। আমরা দেখতে পেয়েছি, এই ব্রিজ নির্মাণে নিম্নমানের রড ব্যবহার করা হয়েছে, যা জুমারবাড়ীর একটি পরিত্যক্ত ব্রিজ থেকে কম দামে কেনা হয়েছে।”
মথরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জামান মিয়া অভিযোগ করেন, “ভাঙারি দোকান থেকে পুরাতন রড কিনে ব্রিজের গার্ডার তৈরি করা হচ্ছে। আমরা বাধা দিলেও ঠিকাদার তা মানছে না। আমরা এ অনিয়মের প্রতিকার চাই।”
এ বিষয়ে প্রকল্পের ঠিকাদার মো. শফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, “ব্রিজ নির্মাণে পুরাতন রড ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। আমাদের রডগুলো সিমেন্টের গোডাউনে রাখা ছিল, তাই হয়তো রঙ বদলে গেছে। তবে, স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা বিষয়টি যাচাই করব।”

এ বিষয়ে সাঘাটা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী নয়ন রায় বলেন, “ব্রিজ নির্মাণে পুরাতন রড ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলজিইডির এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের ফলে ব্রিজের স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তারা দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।