সত্যজিৎ দাস (মৌলভীবাজার প্রতিনিধি):
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশার সঙ্গে হাজীপুর ও শরীফপুর ইউনিয়নের সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে মনু নদীর ওপর ২৩২ মিটার দীর্ঘ রাজাপুর সেতু নির্মাণ করা হয়।
৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২১ সালের জুনে নির্মাণকাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় এটি চালু হয়নি। জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় আটকে আছে সেতুর কার্যকারিতা, ফলে এলাকাবাসী এখনও ঝুঁকিপূর্ণ খেয়াঘাট দিয়ে পারাপার হচ্ছেন।
এদিকে,অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কারণে সেতুর পিলারের নিচের মাটি সরে গিয়ে অবকাঠামো ঝুঁকির মুখে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বারবার দাবি জানালেও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না প্রশাসন। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বালি উত্তোলন বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে,তবে স্থায়ী সমাধান এখনও অনিশ্চিত।
স্থানীয় বাসিন্দা ফয়জুল হক শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারী) বলেন,“সেতুটি চালুর আগেই বালি উত্তোলনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রশাসন যদি এখনই ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে সরকারের ৩২ কোটি টাকা গচ্ছা যাবে।”
পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বলেন, “আমরা সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় খুব খুশি হয়েছিলাম,কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় এটি কোনো কাজে আসছে না। এটি চালু হলে হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত সহজ হবে,গ্রামীণ অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
নদীপাড়ের এক বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা নতুন সেতু দেখে আশার আলো দেখেছিলাম,কিন্তু চার বছর পার হয়ে গেলেও সেটি চালু করা যায়নি। সংযোগ সড়ক না থাকায় আমাদের দুর্ভোগ শেষ হচ্ছে না।”
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ জানিয়েছে,৪৬ একর জমি অধিগ্রহণ করে সংযোগ সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার হামিদ বলেন,,“২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হবে। বালি উত্তোলন বন্ধে আমরা জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে এই সেতুর অপেক্ষায় রয়েছেন। দ্রুত সংযোগ সড়কের কাজ সম্পন্ন ও অবৈধ বালি উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়ে ইতোমধ্যে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। এখন দেখার বিষয়,প্রশাসন কত দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করতে পারে।