পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর ঝাটিবুনিয়া গ্রামের কৃষক সোহাগ মৃধার উপহার দেওয়া কোরবানির গরু ‘কালো মানিক’ গ্রহণ করেননি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তবে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সোহাগ মৃধাকে নিজ এলাকায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোরবানি সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সোহাগ মৃধা ও তার পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং তাদের জন্য ঈদের বিশেষ উপহার পাঠিয়েছেন।
এর আগে সকাল ৮টায় বিশাল আকৃতির ‘কালো মানিক’ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন সোহাগ মৃধা। প্রায় ৩৫ মণ ওজন, ১০ ফুট লম্বা ও ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার এই গরুটিকে নিয়ে মির্জাগঞ্জ থেকে ঢাকায় রওনা হওয়ার সময় সোহাগের সঙ্গে ছিল তিনটি মিনি ট্রাক, ব্যানার, সঙ্গীতের দল এবং টি-শার্ট পরা সহযোগীরা।
সোহাগ মৃধা বলেন, “আজ আমি গণতন্ত্রের মাকে গরুটি উপহার দিতে যাচ্ছি। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।”
তিনি জানান, ২০১৮ সালের শেষের দিকে মাত্র ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকায় একটি ফ্রিজিয়ান গাভি কিনে তার যাত্রা শুরু হয়। সেই গাভির বাছুরকেই ছয় বছর ধরে দেশীয় খাবার ও ভালোবাসা দিয়ে লালন-পালন করে তিনি তৈরি করেন ‘কালো মানিক’কে।
স্থানীয়রা বলছেন, গরুটির এক সময় ১০ লাখ টাকা দাম উঠেছিল, কিন্তু প্রিয় নেত্রীর প্রতি ভালোবাসার কারণে তা বিক্রি করেননি সোহাগ।
সোহাগের মা হাজেরা বেগম বলেন, “ওর মন চাইছে, তাই এটা খালেদা জিয়াকে উপহার দিতে চায়। আমরাও খুশি।”
স্ত্রী সুলতানা আক্তার পলি বলেন, “কালো মানিক আর আমার ছোট ছেলে একই বয়সী। দুজনকেই মায়া দিয়ে বড় করেছি।”
আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, সোহাগ একজন নিবেদিতপ্রাণ বিএনপি কর্মী এবং তার এই উদ্যোগ দলের প্রতি ভালোবাসার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
ঘটনাটি সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই বিষয়টিকে রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও গ্রামীণ মানুষের আন্তরিকতা—দুটিকেই সম্মান জানানোর এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন।