আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
গাজা উপত্যকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া একটি আন্তর্জাতিক সহায়তা বহরকে (ফ্লোটিলা) আটকে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, এই ফ্লোটিলা “হামাসের উদ্দেশ্যে সংগঠিত হয়েছে” এবং এটি “হামাসের স্বার্থ রক্ষায় পরিচালিত।”
‘গ্লোবাল সামুদ ফ্লোটিলা’ নামে পরিচিত এই বহরে রয়েছে সহায়তা সামগ্রী বহনকারী ডজনখানেক নৌযান এবং বিশ্বজুড়ে প্রো-প্যালেস্টাইন অ্যাক্টিভিস্ট, যাদের মধ্যে সুপরিচিত সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ-ও রয়েছেন।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছে:
“এই ফ্লোটিলা, যা হামাস দ্বারা সংগঠিত, মূলত হামাসকে সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে পরিচালিত। ইসরায়েল কোনোভাবেই সক্রিয় যুদ্ধ অঞ্চলে জাহাজ প্রবেশ করতে দেবে না এবং কোনো আইনি নৌ অবরোধ ভাঙতে দেবে না।”
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, যদি অংশগ্রহণকারীদের “বাস্তবিক উদ্দেশ্য” মানবিক সহায়তা প্রদান হয়, তবে তারা যেন জাহাজগুলো আশকেলোন বন্দরে নিয়ে আসে এবং সেখানেই সহায়তা পণ্য খালাস করে। ইসরায়েলের দাবি, সেখান থেকে সমন্বিত উপায়ে দ্রুত গাজায় সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে।
পটভূমি: গাজা সংকট ও আন্তর্জাতিক চাপ
এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এলো, যখন বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ সম্প্রতি ফিলিস্তিনকে স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
এছাড়া জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে গাজা পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তপ্ত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
গাজা যুদ্ধ, ইসরায়েলের সামরিক অভিযান, এবং ফিলিস্তিনিদের মানবিক সংকট ঘিরে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ক্রমাগত বাড়ছে।
ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে অনেকেই মানবিক সহায়তা প্রতিরোধ হিসেবে দেখছে, আবার দেশটি বলছে এটি কেবল “নিরাপত্তা ও যুদ্ধনীতির” অংশ।
গ্রেটা থুনবার্গের অবস্থান
ফ্লোটিলার অংশগ্রহণকারী গ্রেটা থুনবার্গ এর আগে বহুবার গাজায় চলমান মানবিক সংকট এবং ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।
এই যাত্রার উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন:
“গাজার মানুষদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। যেখানে রাষ্ট্রব্যবস্থা ব্যর্থ, সেখানেই নাগরিকদের এগিয়ে আসা উচিত।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
ইসরায়েলের ঘোষণার পর, অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে ফ্লোটিলা আটকে দেওয়ার ঘটনায় সংঘর্ষ বা সামরিক জটিলতা তৈরি হতে পারে।
এখন দেখার বিষয়, ফ্লোটিলা কর্তৃপক্ষ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই পরিস্থিতিতে কী প্রতিক্রিয়া জানায়।