বাংলাদেশের মেয়েরা হকির অনূর্ধ্ব-১৮ এশিয়া কাপে প্রথমবার অংশ নিয়েই দারুণ এক ইতিহাস গড়েছে। অভিষেক টুর্নামেন্টেই ব্রোঞ্জ পদক জিতে নিয়েছে লাল-সবুজের এই সাহসিনী দল। রোববার (১৩ জুলাই) চীনের দাজহুতে অনুষ্ঠিত তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে তারা ৬-২ গোলের বড় ব্যবধানে পরাজিত করে কাজাখস্তানকে। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের মাধ্যমে হ্যাটট্রিক করে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন আইরিন আক্তার।
শুরুটা যদিও ছিল হতাশাজনক। প্রথম ম্যাচেই জাপানের কাছে ১১-০ গোলে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশের মেয়েরা। কিন্তু সেই ধাক্কা কাটিয়ে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করে তারা। পরের ম্যাচে উজবেকিস্তানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরে পায় দল। এরপর একই ব্যবধানে হংকংকে পরাজিত করে পৌঁছে যায় সেমিফাইনালে। সেমিফাইনালে শক্তিশালী চীনের বিপক্ষে ৯-০ ব্যবধানে হারলেও হাল ছাড়েনি মেয়েরা। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচেই দেখা গেল তাদের আত্মবিশ্বাস আর লড়াকু মানসিকতা।
কাজাখস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে শুরুতে পিছিয়ে পড়লেও দ্রুত ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। নবম মিনিটে গোল হজমের পর ১২ মিনিটেই আইরিন আক্তার গোল করে দলকে সমতায় ফেরান। এরপর ১৮ এবং ২০ মিনিটে আরও দুটি গোল করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি, দলকে এগিয়ে নেন ৩-১ ব্যবধানে। দ্বিতীয়ার্ধে ৩৫ মিনিটে অধিনায়ক শারিকা রিমন দলের চতুর্থ গোলটি করেন। এরপর কণা আক্তার এবং রিয়াশা রিশির দুইটি গোল ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের হাতেই রাখে। ৫৯ মিনিটে কাজাখস্তান একটি গোল পরিশোধ করলেও তা ব্যবধানই শুধু কমিয়েছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ পুরুষ হকি দল একই টুর্নামেন্টে পদকের দ্বারপ্রান্তে এসেও তা ছুঁতে পারেনি। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে তারা মালয়েশিয়ার কাছে ৫-২ গোলে হেরে চতুর্থ স্থানে থেকে বিদায় নেয়। শুরুটা ভালো করলেও (হংকংয়ের বিপক্ষে জয়), সেমিফাইনালে তারা ৬-৪ গোলে হারে জাপানের কাছে।
এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন এক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিল মেয়েরা। আত্মবিশ্বাস, একাগ্রতা আর লড়াইয়ের মানসিকতায় তারা প্রমাণ করেছে—যথাযথ সুযোগ ও প্রস্তুতি পেলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লাল-সবুজের পতাকা আরও অনেকবার উড়বে।