অবশেষে ইতিহাস গড়ল ফেডারেশন কাপের সেই বহুল আলোচিত ফাইনাল। আটদিনের অপেক্ষা আর নাটকীয়তার পর ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজল ২৯ এপ্রিল। ২২ এপ্রিল শুরু হওয়া ম্যাচটি আলোকস্বল্পতার কারণে স্থগিত হয়েছিল অতিরিক্ত সময়ের ১০৫ মিনিট পর্যন্ত খেলা হওয়ার পর। বাকি থাকা অতিরিক্ত ১৫ মিনিট এবং টাইব্রেকার পর্ব শেষে শেষ পর্যন্ত জয়ী নির্ধারিত হলো।
এই ফাইনাল এখন বিশ্ব ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘসময় ধরে চলা অফিসিয়াল ম্যাচ হিসেবে স্বীকৃতি পেল। সময়ের হিসাবে এর মোট দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে ৮ দিন ও ১৫ মিনিট—যা ভেঙে দিয়েছে ২০২৩ সালে ইউক্রেনের দিনপ্রো-১ বনাম এফসি অলেক্সান্দ্রিয়ার ম্যাচের ৪ ঘণ্টা ৩৬ মিনিটের আগের রেকর্ড।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ইউক্রেনের সেই ম্যাচে রাশিয়ান বিমান হামলার আশঙ্কায় বাজানো হয়েছিল এয়ার সাইরেন, খেলোয়াড়রা আশ্রয় নিয়েছিলেন ড্রেসিংরুমে। কিন্তু ম্যাচটি শেষ হয়েছিল একই দিনে, যদিও প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সময় লেগেছিল।
বাংলাদেশের এই ম্যাচটি অবশ্য খেলা ছাড়াই দীর্ঘায়িত হয়েছিল, যার পরিসংখ্যান প্রায় ১৭০ ঘণ্টা পর্যন্ত পৌঁছেছে। তবে এটিকে অফিসিয়াল রেকর্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে, কারণ এটি একই ম্যাচের ধারাবাহিক অংশ হিসেবে গৃহীত হয়েছে এবং ফিক্সচারের নিয়ম অনুযায়ী পুনরায় শুরু হয়েছিল একই পর্ব থেকে।
ফুটবলে দীর্ঘতম ম্যাচের উদাহরণ খুব বেশি নেই। ১৯৪৬ সালে ইংল্যান্ডে স্টকপোর্ট কাউন্টি ও ডনকাস্টার রোভার্সের মধ্যে এক ম্যাচে অতিরিক্ত সময়ে ‘সাডেন ডেথ’ নিয়মে খেলা চলেছিল টানা ৩ ঘণ্টা ২৩ মিনিট, যেখানে গোল না হওয়া পর্যন্ত খেলা চলত। সেখান থেকেই পরবর্তীকালে ‘গোল্ডেন গোল’ ধারনার উৎপত্তি হয়।
অফিসিয়াল নয় এমন ম্যাচ বিবেচনায় নিলে, ২০১৯ সালে ওয়েলসে আয়োজিত এক প্রীতি ম্যাচ দীর্ঘতম হিসেবে পরিচিত—যেটি চলেছিল ১৬৯ ঘণ্টা। তবে সেটি ছিল সম্পূর্ণ আলাদা প্রকৃতির আয়োজন, যেখানে খেলোয়াড়দের জন্য ঘুমানোর ব্যবস্থাও ছিল।
বাংলাদেশের এই ফাইনাল ফুটবল ইতিহাসে শুধু সময়ের বিচারে নয়, নাটকীয়তা ও বিরলতায়ও একটি স্মরণীয় রেকর্ড হিসেবে জায়গা করে নিল।