ইকবাল হাসান মাহমুদ সাজিদ,বুটেক্স প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুটেক্স) দিন দিন বেড়ে চলেছে চুরির ঘটনা। এতে করে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাহীনতার চিত্র ফুটে উঠেছে। যা সবার মাঝে উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তুলছে।
সম্প্রতি এসির পাইপ চুরির ঘটনা ঘটেছে। সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায়, এক অজ্ঞাত লোক জুট ল্যাবের সাথের দেয়াল টপকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে এসির পাইপ চুরি করে পালিয়ে যায়। উপাচার্যের কক্ষের একটি এসি, রেজিস্ট্রারের কক্ষের একটি এসি ও মসজিদের দুইটি এসি, মোট ৪টি এসির পাইপ চুরি হয়।
ক্যান্টিনের এক্সটেনশনে প্রকল্প বাস্তবায়নে গাছ কাটতে গিয়ে দেয়ালের গ্রিলের একাংশ ভেঙ্গে পড়ে। ভাঙ্গা গ্রিল দেয়াল থেকে অন্যত্র সরানোর আগেই দিনদুপুরে এটা চুরি হয়ে যাওয়ার অভিযোগও এসেছে। এছাড়া ক্যাম্পাসের ভিতর থেকে প্রায়ই মোবাইল চুরির অভিযোগ পাওয়া যায়।
নিরাপত্তাহীনতার এই চিত্র ক্যাম্পাসের নিরাপদ পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এসব ঘটনায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রহরীদের গাফিলতির অভিযোগ তুলছে অনেকে। অনেকে অভিযোগ করেছে ক্যাম্পাসে যে কেউ চাইলেই ঢুকতে পারে, নিরাপত্তারক্ষীরা জিজ্ঞাসাবাদও করে না। নিয়মিত সম্পূর্ণ ক্যাম্পাস টহল দেওয়া হয় না। এছাড়া দায়িত্বরত অবস্থায় সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করে স্মার্ট ফোনে গেম খেলে, ভিডিও দেখে সময়ক্ষেপণের অভিযোগ রয়েছে। এই নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়োগ করা হয় আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. শেখ মোঃ মামুন কবীর বলেন, এসির পাইপ চুরি হওয়ায় হাজার হাজার টাকা দিয়ে এসির পাইপ লাগাতে হচ্ছে। দিনের বেলায় দেয়ালের গ্রিল খুলে নিয়ে চলে যাচ্ছে অথচ নিরাপত্তারক্ষীরা কিছু দেখছে না। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী করতে হবে। সিকিউরিটি ইন্সপেক্টরকে বলা হয়েছে উনি নিরাপত্তারক্ষীদের শোকজ পত্র দিবেন। শোকজের জবাবে সদুত্তর দিতে না পারলে চাকরিচ্যুত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বেতন দিয়ে অযথা বসিয়ে রাখা যাবে না। আউটসোর্সিং এর পরিবর্তে ভিন্ন কোনো প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ দেয়া যায় কিনা সেটা নিয়ে ভাবা হচ্ছে।
সিকিউরিটি ইন্সপেক্টর জুবায়ের হোসেন বলেন, আমি নতুন জয়েন করেছি এবং চুরির বিষয়গুলো শুনেছি। তিন শিফটে মোট ২০ জন নিরাপত্তাকর্মী কাজ করলেও, প্রতি শিফটে ৪-৫ জন দিয়ে পুরো ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। ক্যাম্পাসের চার কোণায় চারটি ওয়াচ টাওয়ার থাকলে সহজেই সম্পূর্ণ ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণ করা যেতো।
তিনি আরও বলেন, ক্যাম্পাসের পুরাতন ভবনগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের কাছাকাছি থাকায়, প্রাচীর ও দেয়ালের মাঝের রাস্তাগুলো দিয়ে টহল দেয়া যায় না। নিরাপত্তারক্ষীদের বাঁশি, লাঠি, টর্চ লাইট ইত্যাদি সরঞ্জাম নাই। তাছাড়া এখানে কর্মরত নিরাপত্তারক্ষীরা বয়স্ক হওয়ায় তাদের চাকরীও শেষের দিকে এবং তারা নিরাপত্তা কাজের জন্য উপযুক্ত নয়। তারা ডিউটি চলাকালীন সময়ে স্মার্ট ফোন ব্যবহার করতে পারবে না, শুধু বাটন ফোন ব্যবহার করবে। আশা করি ধীরে ধীরে সামনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো উন্নত হবে।