বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সংহতির অংশ হিসেবে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্রের পরিচালক এবং ভারপ্রাপ্ত লাইব্রেরিয়ান পদত্যাগ করেছেন। এর আগে আরও তিনজন শিক্ষক প্রশাসনিক পদ থেকে সরে দাঁড়ান।
ভিসির পদত্যাগের দাবিতে ইতোমধ্যে ১৫টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা যৌথভাবে বিবৃতি দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষকরা একাত্মতা জানান। এসময় ‘উদ্বিগ্ন শিক্ষক সমাজ’-এর পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি পাঠ করা হয়।
পরে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে এবং তা শেষে আবার গ্রাউন্ড ফ্লোরে ফিরে আসে।
এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিন, কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার, সহকারী অধ্যাপক উন্মেষ রায়, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এটিএম রফিকুল ইসলাম এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সিরাজিস সাদিক প্রমুখ।
শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিন বলেন, “একাডেমিক কাউন্সিল এবং সিন্ডিকেট সভা থেকে আমাকে বেআইনিভাবে এবং সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমাকে ‘ফ্যাসিস্ট’ আখ্যা দিয়ে অপমানজনকভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচার ও দমননীতির স্পষ্ট প্রমাণ।”
সাবেক প্রক্টর ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এটিএম রফিকুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষার্থীদের নামে যে মামলা করা হয়েছে, তার সঙ্গে আমি একমত নই। আমি তখন প্রক্টর ছিলাম, কিন্তু মামলার বিষয়ে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। আমাদের ছাত্রদের বিরুদ্ধে কেন মামলা হবে? তাদের তো ক্যারিয়ার আছে। আর অধ্যাপক মুহসিন স্যারকে দেওয়া চিঠির ভাষাও ছিল অগ্রহণযোগ্য। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে আমি আজ এখানে দাঁড়িয়েছি।”
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সুজয় বিশ্বাস শুভ বলেন, “আগামীকাল গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা রয়েছে। আমরা জেনেছি, এ পরীক্ষায় উপাচার্যের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক নয়। তাই তাঁকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তবে, পরীক্ষা যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, তা নিশ্চিত করতে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করব।”
এদিকে ‘কাজ নেই, মজুরি নেই’ ভিত্তিতে কর্মরত কর্মচারীরাও এ কর্মসূচিতে সংহতি জানান।
পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে আন্দোলনকারীরা শুক্রবারের গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষায় উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন।