নোবিপ্রবি প্রতিনিধি:
‘উপকূলীয় অক্সফোর্ড’ খ্যাত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) তার ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেছে বর্ণাঢ্য আয়োজনে। ২৩ জুন ২০২৫, রবিবার, বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় দিবস, রিসার্চ ফেয়ার এবং একাডেমিক এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন,
“২০০৬ সালের ২২ জুন একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। সেই দিনটিকেই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে উদযাপন শুরু হলো এবার থেকে। গবেষণা ও শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে আমরা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় কাজ করছি, এবং এই আয়োজনে তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।”
🎓 রিচার্জ ফেয়ার ও ডিনস অ্যাওয়ার্ড: এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট এবং প্রশাসনিক দপ্তরগুলো তাদের চলমান গবেষণা কার্যক্রম প্রদর্শন করে। এ রকম রিসার্চ ফেস্ট বিশ্ববিদ্যালয়টির ইতিহাসে এই প্রথম। শিক্ষার্থীদের মধ্যে গবেষণাভিত্তিক মানস গঠনে এই পদক্ষেপকে সময়োপযোগী বলেও মত দেন শিক্ষকরা।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথমবার ডিনস অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। বিভিন্ন বিভাগ থেকে বাছাইকৃত প্রায় ৩১ জন শিক্ষার্থীকে একাডেমিক কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ এই সম্মাননা দেওয়া হয়।
💬 শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনুভূতি
আইন অনুষদের সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদুল করিম বলেন,
“মাত্র চারটি বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু করে আজ একত্রিশটি বিভাগে বিস্তার লাভ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয় যেন গবেষণার আলোকবর্তিকা হয়ে ওঠে, সেই প্রত্যাশা রইল।”
অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারিয়ান তাহরীম বলেন,
“প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কেবল একদিনের উৎসব নয়, বরং এটি আমাদের নোবিপ্রবিকে ভালোবাসা ও মূল্যায়নের প্রতিফলন। গবেষণা উৎসব ও পুরস্কার প্রদান সেই মূল্যবোধেরই বহিঃপ্রকাশ।”
শিক্ষার্থীরাও দিনটিকে দেখেছেন নতুন আশার আলো হিসেবে। অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র রিদোয়ান আহমেদ বলেন,
“গবেষণাকেন্দ্রিক শিক্ষা গঠনের পথে এটি একটি দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ।”
বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফারুক মোহাম্মদ ইসহাক বলেন,
“প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রযুক্তির অভাব অনুভূত হয়েছে দীর্ঘদিন। তবে নতুন প্রশাসনের পদক্ষেপগুলো আমাদের আশাবাদী করে তুলছে।”
অর্থনীতি বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মৃত্তিকা দাস বলেন,
“এই দিন যেন শুধু ফেস্টুনে না আটকে থাকে, বরং হোক আমাদের স্বপ্ন ও একতা উদযাপনের দিন।”
🌱 ভবিষ্যতের দিগন্ত
নোবিপ্রবি প্রশাসন জানিয়েছে, শিক্ষার মানোন্নয়নে আধুনিক অবকাঠামো, প্রযুক্তি ব্যবহারে জোর, এবং নিয়মিত ক্লাস নিশ্চিত করতে কক্ষসংকট নিরসনে কাজ চলছে। পাশাপাশি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষ শিক্ষক নিয়োগের বিষয়েও অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
📌 পটভূমি
২০০১ সালের ১৫ জুলাই আইন পাসের মাধ্যমে নোবিপ্রবির পথচলা শুরু হলেও একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৬ সালের ২২ জুন। দেশের ২৭তম এবং পঞ্চম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এটি গড়ে ওঠে নোয়াখালী মাইজদী শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দক্ষিণে ১০১ একর জায়গাজুড়ে।