জসিম উদ্দিন,নোবিপ্রবি প্রতিনিধি :
উপকূলীয় ক্যামব্রিজ খ্যাত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের ২৭ তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৫ম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
২৩ জুন ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ, (৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ) নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)-এর ‘১৯তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন, রিসার্চ ফেয়ার এবং একাডেমিক এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২৫’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস নিয়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থীর ভাবনা, অনুভূতি, প্রত্যাশা ও অভিব্যক্তি জানাচ্ছেন দৈনিক বাংলা এফএম নিউজের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি জসিম উদ্দিন
১. বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা
নোবিপ্রবির একাডেমিক কার্যক্রমের শুরুদিনকে এবার ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ হিসেবে উৎসবমুখরভাবে উদযাপন করা হচ্ছে। র্যালি, গবেষণা মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুখর থাকবে পুরো ক্যাম্পাস।
১৯ বছরে প্রথমবারের মতো রিসার্চ ফেয়ারে বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও দপ্তরগুলো তাদের উদ্ভাবনী কার্যক্রম উপস্থাপন করবে। একই সঙ্গে ডিনস অ্যাওয়ার্ড চালু করে প্রায় ৩১ জন শিক্ষার্থীকে সম্মাননা দেওয়া হবে।
নতুন প্রশাসনের লক্ষ্য—মানসম্মত শিক্ষা ও গবেষণা নিশ্চিত করা। শিক্ষক প্রশিক্ষণ, দক্ষ নিয়োগ ও ক্লাসরুম সংকট নিরসনে কাজ চলছে।
নোবিপ্রবির এই নতুন যাত্রায় সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা।
— অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল, উপাচার্য, নোবিপ্রবি
২. প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভক্ষণে নোবিপ্রবিকে হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসা*
প্রতিষ্ঠার পর হতে গুনে গুনে ১৮ টি পৃথিবীর মহাজাগতিক ঘূর্ণন সহ্য করে ১৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে বাংলাদেশের উপকূলের প্রান্তঘেঁষা আমাদের প্রাণের ১০১ একর – নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এই অল্প কিন্তু খুবই তাৎপর্যপূর্ণ সময়টুকুতে বিশ্ববিদ্যালয়টি শুধু যে বসন্তই পার করেছে তা নয়, পরম সহিষ্ণুতায় অতিবাহিত করেছে গ্রীষ্ম, বর্ষা ও শীতের প্রতিকূলতাগুলোকেও।
প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীর জীবন যদি হয় সাদা রঙের কোন ক্যানভাস, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়টুকু হয় তাতে বাহারী রঙের তুলির বিচিত্র আঁচড়। শুধু শিক্ষার্থীর নিজ জীবনেই নয়, এই নির্মল সৃষ্টি সুখের রঙ শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রের পরতে পরতেও। এই অনিন্দ্য সুন্দর কর্তব্যটুকু নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও বছর ঘুরে ঘুরে পালন করে যাচ্ছে ক্লান্তিহীন উচ্ছ্বাসে। কর্তব্যের ফর্দে এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ‘রিসার্চ ফেস্ট’ ও পুরষ্কার বিতরণী নামক আরও কিছু রঙিন পালক যুক্ত করতে যাচ্ছে বর্তমান প্রশাসন, যা প্রমান করে এই প্রশাশন তার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তাদের মূল্যায়ন করতে কতটা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রাণপ্রিয় নোবিপ্রবির প্রতি অন্তঃস্থল প্রত্যাশা থাকবে – এই ১০১ একর যেন তার স্টেকহোল্ডারদের পরম যত্নে যথার্থ মূল্যায়নে লালন পালন করে যেতে পারে আরও শতটি বসন্ত। হাজারো শুভকামনা রইলো স্বপ্নভূমির প্রতি।
—ফারিয়ান তাহরীম
সহকারী অধ্যাপক,
অর্থনীতি বিভাগ,
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
৩. উপকূলীয় অক্সফোর্ড নোবিপ্রবির ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা ও শুভকামনা
২০০৬ সালে চারটি বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু করে আজ ৩১টি বিভাগ ও দুটি ইনস্টিটিউটে পরিণত হয়েছে নোবিপ্রবি। শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উজ্জ্বল করছে।
শিক্ষা-গবেষণায় মানোন্নয়নের জন্য আধুনিক অবকাঠামো, প্রযুক্তির ব্যবহার ও গুণগত শিক্ষক নিয়োগে বর্তমান প্রশাসন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রত্যাশা—নোবিপ্রবি যেন সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়।
— সাজ্জাদুল করিম, সহকারী অধ্যাপক, আইন অনুষদ
৪. বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে গবেষণা মেলা: একটি সময়োপযোগী ও দূরদর্শী পদক্ষেপ
নোবিপ্রবিতে প্রথমবারের মতো আয়োজিত গবেষণা মেলা নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মান শুধু পাঠদানে নয়—গভীর গবেষণায়ও নির্ভর করে।
এই মেলা তরুণ গবেষকদের অনুপ্রাণিত করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণা-নির্ভর শিক্ষাব্যবস্থার দিকে এগিয়ে নেবে।
এটি ভবিষ্যতের উদ্ভাবনী চর্চার এক শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করবে।
— রিদোয়ান আহমেদ, অর্থনীতি বিভাগ, ১৩তম ব্যাচ
৫. প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রযুক্তির প্রত্যাবর্তনের প্রত্যাশা
নাম প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও নোবিপ্রবিতে প্রযুক্তির ব্যবহার অতীতে ছিল নগণ্য। তবে ‘জুলাই বিপ্লব’-পরবর্তী প্রশাসন কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথমবার বড় আয়োজন হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন আমাদের জন্য গর্বের। আশা করি, এই বছরেই কনভোকেশনও বাস্তবায়িত হবে।
— ফারুক মোহাম্মদ ইসহাক, বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৫তম ব্যাচ
৬. শুভ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস, প্রিয় নোবিপ্রবি!
নয় বছর পর আমরা উদযাপন করতে যাচ্ছি এক গর্বের দিন—২৩ জুন। এই দিন আমাদের জীবনের গল্প, গর্ব ও স্বপ্নের প্রতিচ্ছবি।
নোবিপ্রবি শুধু শিক্ষা নয়, দিয়েছে আত্মবিশ্বাস, নতুন পরিচয় ও একটি পরিবার।
আমরা চাই—আরও আধুনিক লাইব্রেরি, ল্যাব, গবেষণার সুযোগ এবং প্রশাসনের সহযোগিতা।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হোক কেবল অনুষ্ঠান নয়—হোক একতা, স্বপ্ন আর অর্জনের উৎসব।
— মৃত্তিকা দাস, অর্থনীতি বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ