ইকবাল হাসান মাহমুদ সাজিদ, বুটেক্স প্রতিনিধি:
গাজায় ইসরায়েলের অবিরাম হামলার ফলে প্রতিদিনই নারী-শিশুসহ সাধারণ জনগণের প্রাণহানি ঘটছে। সাম্প্রতিককালে আমেরিকার ফিলিস্তিন নীতির কারণে মুসলিম বিশ্ব ক্ষুব্ধ, যার প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন।
আজ শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজের পর দুপুর ২টায় বুটেক্সের জি.এম.এ.জি ওসমানী হলের মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে ওসমানী হল প্রাঙ্গণে এসে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের ওপর ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলা ও গণহত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানান। পাশাপাশি আমেরিকার ফিলিস্তিন নীতিরও সমালোচনা করেন। তারা “আমেরিকার দালালেরা, হুশিয়ার সাবধান”, “পশ্চিম না পূর্ব, পূর্ব পূর্ব”, “ওয়েক আপ, ওয়েক আপ, মুসলিম আর্মি ওয়েক আপ”—এসব স্লোগানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের আহ্বান জানান।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, “গাজার ওপর ইসরায়েলের হামলা ও গণহত্যা বন্ধ করতে আমরা রাজপথে নেমেছি। আমরা মার্কিন প্রশাসনের ফিলিস্তিনবিরোধী ভূমিকার নিন্দা জানাই। আমাদের একমাত্র প্রত্যাশা—পৃথিবীর মানচিত্রে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক।”
৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আসিফ বলেন, “যুদ্ধবিরতির পরও নিজেদের অনিশ্চিত জীবন জেনেও ফিলিস্তিনিরা তাদের পবিত্র ভূমিতে ফিরছেন। শাম (বর্তমান সিরিয়া, ফিলিস্তিন, জর্ডান ও লেবাননের অংশ) ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি বহু নবীর ভূমি এবং কিয়ামতের পূর্ববর্তী গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর কেন্দ্রস্থল। নবী মুহাম্মদ (সা.) একে বরকতময় অঞ্চল হিসেবে বর্ণনা করেছেন। অথচ আজ আমরা মুসলিম বিশ্ব যদি তাদের মতো ঈমানি চেতনায় উজ্জীবিত হতাম, তবে আমরা আজ তাদের পাশে থাকতাম। কেয়ামতের দিন প্রত্যেককে তার দায়িত্বের ব্যাপারে জবাবদিহি করতে হবে। তখন মুসলিম বিশ্বের ক্ষমতাধররা কী জবাব দেবেন আল্লাহর কাছে? কেন তারা আজ নিশ্চুপ?”
৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, “আমেরিকাসহ পশ্চিমা বিশ্ব মানবাধিকারের কথা বললেও, বাস্তবে বিশ্বের বড় বড় অমানবিক কর্মকাণ্ড, হত্যাকাণ্ডের পেছনে তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন রয়েছে। এই ফিলিস্তিন নীতির প্রতিবাদে আমাদের মুসলিম ভাইদের রক্ষার্থে মুসলিম রাষ্ট্রসমূহকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের গাজা উপত্যকা নিয়ে প্রস্তাব আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। উত্তর কোরিয়া এই প্রস্তাবকে ‘হাস্যকর’ এবং ‘ডাকাতি’ হিসেবে অভিহিত করেছে। ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তা ও শান্তির ক্ষীণ আশাও ধ্বংস করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।