মোঃ আব্দুল কুদ্দুস, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
চলনবিল অঞ্চলে আকস্মিক বন্যায় তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, সিংড়া ও গুরুদাসপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এতে পাকা নাবিজাত ব্রিধান-২৯ বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে কৃষকদের কোরবানির ঈদের আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে।
শ্রমিক নেই, হারভেস্টারও ডুবে যায়
মাঠে ধান পাকার পর শ্রমিকরা ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই হঠাৎ বন্যায় ধান ডুবে যায়। শ্রমিক সংকটে কৃষকরা হারভেস্টার মেশিন ভাড়া করে ধান কাটার চেষ্টা চালান। তবে পানি বাড়ায় সেই মেশিনও অচল হয়ে পড়ে।
নাটোরের সিংড়া, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, এবং উল্লাপাড়ার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা গলা পানিতে নেমে নৌকা দিয়ে ধান কাটার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে অর্ধেক ভাগে ধান তুলে নিচ্ছেন, যাতে কিছু হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যায়।
স্থানীয় কৃষক বললেন…
তাড়াশের মাগুরাবিনোদ গ্রামের কৃষক সেলিম আক্তার বলেন:
“অনেকে শ্রমিক না পেয়ে ধানের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার ভাগে দিয়ে যা বাঁচানো যায়, সেই চেষ্টা করছেন।”
কতটা ধান নষ্ট হলো?
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলনবিল এলাকায় ৯০ ভাগ ধান ইতিমধ্যে কাটা শেষ হলেও নাবিজাত ব্রিধান-২৯ যেসব জমিতে ছিল সেসবই এখন পানির নিচে। প্রধানত সরিষার জমিতে লাগানো বিলম্বিত ধান-ই ক্ষতির মুখে পড়েছে।
পানি বাড়ছে কেন?
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, উজান থেকে নেমে আসা ঢল এবং স্থানীয় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে চলনবিলের জলাভূমি প্লাবিত হয়েছে।
চলনবিলে প্রবাহিত ১৬টি নদীর মধ্যে আত্রাই ও ভদ্রাবতী নদীর মাধ্যমে পানি যমুনায় নামলেও বৃষ্টিপাতের কারণে পানি নামতে পারছে না।
নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রকৌশলী এমরান হোসেন বলেন:
“ঈদের আগের ২৪ ঘণ্টায় পানি কিছুটা বেড়েছিল, তবে ঈদের পর তা কিছুটা কমেছে। কিন্তু বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় নিম্নাঞ্চলে পানি বাড়ছে।”
এলাকাভিত্তিক পরিস্থিতি:
- তাড়াশের মাগুরাবিনোদ ও মাগুরা মুকন্দ গ্রাম: পানিতে নেমে ধান কাটা হচ্ছে।
- শাহজাদপুরের রাউতারা বাঁধ এলাকা: কিছু এলাকা রক্ষা পেলেও বৃষ্টিতে পুনরায় ডুবছে।
- সিংড়া-তাড়াশ সংযোগস্থল: ভদ্রাবতী নদীর জলকপাট উপচে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।