সাইফুল ইসলাম, বাউফল (পটুয়াখালী ) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর বাউফলে চলিত বছরে স্থানীয় জাতের ২০ হেক্টর চৈতা বোরোসহ ৮ হাজার ৫০৩ হেক্টর বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে। তবে এই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। উপকূলীয় প্রতিকূল পরিবেশ ও নোনা পানি সহনীয় বিবেচনায় রেখে এরই মধ্যে ১ হাজার ৬০০ জন কৃষককে ৫ কেজি করে উন্নত জাতের বীজ ও ২০ কেজি রাসয়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আনছার উদ্দিন জানান, কৃষকের মধ্যে আরও সেচ পাম্প প্রদান, খাল-নালা ও পতিত পুকুর-ডোবা খননের মাধ্যমে সেচ সুবিধা দিয়ে বোরো আবাদ আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব। আশা করছি কৃষকরা বোরো আবাদে এবার ভালো ফলন পাবেন।
মাঠে কৃষকপর্যায়ে অনুসন্ধানে জানা গেছে, একই জমিতে আমন শেষে সামান্য কলাই, মুগ জাতীয় কিছু ফলানো গেলেও কয়েক বছর আগেও উপজেলার হাজার হাজার হেক্টর জমি বছরজুড়ে পতিত থাকত। শুধু বৃষ্টিপাতের ওপর ভরসা করেই এখানের কৃষকরা বোরো চাষ করতেন। বিএডিসির মাধ্যমে ১৯৭৮-৭৯ সালে উপজেলায় খাল খনন ও মাঠপর্যায়ে কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে ও বিনা ভাড়ায় ৪৮০টি ২২০ সিসি সেচযন্ত্র প্রদান করা হয়। কৃষকপর্যায়ে তখন রোরো ও ইরি চাষে ব্যাপক সাড়া পড়ে। ভারত, ইংল্যান্ড ও চীনের তৈরি ২ কিউসেক সেচ সুবিধার ওইসব যন্ত্রের একেকটির মাধ্যমে প্রায় ৬০ একর জমি আবাদ করা গেলেও ভর্তুকি বন্ধ ও অব্যবস্থাপনায় প্রকল্পের কাজ মুখথুবড়ে পড়ে।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর বাউফলের আয়োজনে ও পরামর্শে সমন্বিত “খামার যান্ত্রিকীকরন” প্রকল্পের অর্থায়নে দাসপাড়া ইউনিয়নের খাজুর বাড়িয়া ব্লকে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে বীজ সহায়তায় ২০ ( একর) জমিতে রাইস প্লান্টার যন্ত্রের মাধ্যমে ব্রিধান ৭৪ জাতের বোরো ধানের চারা রোপন করা হয়েছে । রোপন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন জনাব আজমীর রহমান আকাশ কৃষি সম্প্রসারন অফিসার বাউফল। মো: আনছার উদ্দিন মোল্লা উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন অফিসার বাউফল জনাব মো: রফিকুল ইসলাম উপসহকারী কৃষি অফিসার বাউফল জনাব মো: রেদোয়ান উদ্দিন তালুকদার
দেশের উত্তরাঞ্চলের তুলনায় ফসল মৌসুমের ২০-২২ দিনের তারতম্য থাকলেও পৌষ-মাঘ এই দুই মাস উপকূলীয় বাউফলে বোরো ধান চাষের উপযুক্ত সময়।
উল্লেখ্য, ৭ জেলা (বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠী, বরগুনা, মাদারীপুর, শরীয়তপুর) কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে বাউফলে কৃষক গ্রুপের মধ্যে ৫০টি সেচ পাম্প বিতরণ করা হয়েছে। সেচ সুবিধা আরও বৃদ্ধি করাসহ সার-ওষুধের দাম কমিয়ে আনলে ও ভালো বাজারদর পেলে বোরো চাষে কৃষকের যেমন আগ্রহ বাড়বে, তেমনি এখানকার অর্থনীতির চাকা বেগবান ও চাঙ্গা হবে।