নাজমুল হোসেন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ।।
রাণীশংকৈলে এবারেই প্রথম বারের মতো পরিক্ষা মুলক ভাবে পৌর শহরের ভান্ডারা এলাকার কৃষক সোহেল রানা সুইট কর্ন বা মিষ্টি ভুট্টা চাষ করে সফলতার পেয়েছেন।তাকে দেখে এখন ওই এলাকার অনেকেই এই ফসল আগামীতে চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন।
এই মোচাগুলো ফ্যাক্টরিতে প্রক্রিয়াজাত করে স্পেন, চায়না, আমেরিকা সহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হবে।সুইট কর্ন বা মিস্টি জাতের ভুট্রা চাষে ভালো ফলন পেয়েছেন সোহেল রানা।তিনি বলেন,উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় স্পেন বাংলাদেশ এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানির নতুন জাতের এ ফসল পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবারের মতো ১০ শতাংশ জমিতে চাষ করেছি। ইতিমধ্যে ফসল সংগ্রহ করে ঘরে তুলেছেন তিনি।
কৃষক সোহেল রানা বলেন, প্রথমবারের মতো ১০শতাংশ জমিতে মিষ্টি জাতের ভুট্টা চাষ করেছি যেটা সুইট কর্ন নামে পরিচিত। প্রথমবার পরিক্ষা মুলক ভাবে চাষ করেছি এই ফসল, তবে এই ফসল চাষে তেমন কোন অভিজ্ঞতা নেই আমার। এই ফসল চাষে যেভাবে পরামর্শ দিয়েছেন কোম্পানির লোকজন ও কৃষি অফিস সে ভাবেই আমি পরিচর্যা করেছি ইনশাআল্লাহ এতেই ভালো একটা ফলাফল পেয়েছি। মিষ্টি ভূট্টা চাষাবাদে সকল খরচ স্পেন বাংলাদেশ এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানি বহন করেছে। কোম্পানির প্রতিনিধিরা সরাসরি জমি থেকে কাঁচা খোসা সহ মোচাগুলো ১২ টাকা কেজি ধরে ক্রয় করেন আমার কাছে থেকে। ফলে বিক্রয়ের কোনো ঝামেলা হয়নি, এবং এর চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। আমি এবারের অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগিয়ে আগামীতে এই চাষাবাদ আরও বৃদ্ধি করার চিন্তা ভাবনা করছি।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল খালেক ও হাফিজ উদ্দিন সহ কয়েক জন কৃষক বলেন আমরা এই ভূট্টার চাষ আগে কখনো দেখিনি স্বল্প সময়ে এত ভালো ফলন ও তুলনামূলক দামও বেশি তাও আবার মোচাসহ বিক্রি বাজার জাতে কোন ঝামেলা ছাড়াই। সেজন্য ভাবছি আগামী বছর এই সুইট কর্ন জাতের ভুট্টার চাষ করবো।
এই সুইট কর্ন জাতের মিস্টি ভুট্টা চাষ করে দেশীয় অর্থ সহ বিদেশে রপ্তানি করেও মুদ্রা অর্জন করা যায়। এটির বহি-বিশ্বে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই মিস্টি জাতের ভুট্রা দিয়ে বিদেশে বড় বড় রেস্টুরেন্ট গুলোতে জুস, কফি,সুইট কর্ন সহ উন্নত জাতের খাবার তৈরি করা হয়।
স্পেন বাংলাদেশ এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড মাল্টিন্যাশনাল এক্সপোর্ট কোম্পানির ফিল্ড অফিসার মির্জা আসাদুজ্জামান বলেন, সুইট কর্ন আবাদে অন্য জাতের ভুট্টার তুলনায় অর্ধেক সময় লাগে আমরা সরাসরি কৃষকের জমি থেকে ভুট্টার সবুজ মোচা ১২ টাকা কেজি ধরে ক্রয় করি। পরে এগুলো খোসা থেকে বের করে ফ্যাক্টরিতে প্রক্রিয়াজাত শেষে স্পেন, চায়না, আমেরিকা সহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়। কৃষক যদি ভালোভাবে পরিচর্যা করে তবে এই ভুট্টা প্রতি শতাংশে ১৪০ থেকে ১৫০ কেজি পর্যন্ত উৎপাদন করা সম্ভব এটি একটি লাভজনক ফসল। এবং এর পুষ্টিগুণ ও চাহিদা ব্যাপক।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম বলেন, এই প্রথম স্পেন বাংলাদেশ এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানির এর পক্ষ থেকে রাণীশংকৈল উপজেলার পৌর শহরের ভান্ডারা এলাকায় সুইট কর্ন বা মিষ্টি ভুট্টার একটি প্রদর্শনী দেয়া হয়েছিল। সুইট কর্ন একটি উচ্চ মূল্যের গুণগত মান সম্পন্ন ভুট্টার জাত। এটি ভুট্রার চেয়ে ফলনও অনেক বেশি,সুইট কর্ন আবাদ বৃদ্ধি করলে আমরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে যেমন রপ্তানি করতে পারি ও নিজেরাও খেতে পারি। এটার মধ্যে প্রচুর পুষ্টিগুণ রয়েছে। আমরা কাঁচা অবস্থায় এই ভুট্টা সংগ্রহের ফলে ভুট্টা গাছটিকে সাইলেজ করে গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারবো। পরবর্তীতে ওই জমিতে ধান সহ অন্য ফসল আবাদ করতে পারবো।