নেত্রকোণা প্রতিনিধি ঃ
নেত্রকোণার মদনে নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে সেচ মেশিন দিয়ে বিল শুকিয়ে মাছ ধরার অভিযোগ উঠেছে ইজারাদার ও স্থানীয় বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে। বিলের পানি শুকিয়ে ফেলায় প্রায় ৩০ একর বোরো জমি সেচ সংকট সহ দেশীয় মৎস্য প্রজনন হুমকি মুখে পরেছে। এ নিয়ে স্থানীয় কৃষকরা বার বার প্রশাসন ও পুলিশকে অবগত করলেও কোন রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, মদন সদর ইউনিয়নের মদন গ্রামের পাশে প্রায় ১৫ একর জমি নিয়ে বাইন বিল নামের একটি জলমহাল রয়েছে। সরকার থেকে ৩ বছরের জন্য জলমহালটি ইজারা নেয় হাওর বাংলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি। সমিতির সভাপতি উলাদ মিয়া বিলটি নিয়ন্ত্রণ করতো। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ ৫ আগস্টের পর জলমহালটি নিয়ন্ত্রণ করছেন মদন পৌর বিএনিপর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, বাইন বিলের পানি দিয়ে আশপাশের প্রায় ৩০ একর বোরো জমির সেচ দেওয়া হয়। কিন্তু মাছ ধরার জন্য বিলটির পানি মেশিন দিয়ে শুকানো হয়েছে। এতে করে আশপাশের জমিগুলোতে সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। পানির অভাবে ফসলহানির শঙ্কায় অর্ধশত কৃষক পরিবার। কৃষক রহিছ উদ্দিন জানান, গত ০৯ মার্চ মদন পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির “বাইন বিল” শুকিয়ে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে সেচ মেশিন চালু করে। বিষয়টি আমি মদন থানার ওসি মহোদয়কে অবগত করি। তার পরামর্শে থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এমনকি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি অবগত করার পরও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় বাইন বিল শুকিয়ে মাছ ধরার সুযোগ পায় আব্দুল কাদির। একদিকে বিলের পাড়ের জমি সেচ সংকটে পড়লো এবং অন্যদিকে দেশীয় মাছের প্রজনন বৃদ্ধি হুমকির মধ্যে পড়লো। আদালতের দ্বারস্থ হয়েও বিলের সেচ বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এ সময় স্থানীয় কৃষক আজিম উদ্দিন, সুলতানসহ কয়েকজন কৃষক জানায়, ‘বাইন বিল যারা ইজারা নেয় তারা প্রতি বছরই বিল শুকিয়ে মাছ ধরে। এতে করে প্রতি বছরই সেচের পানির ঘাটতি দেখা দেয়। আর খরা দেখা দিলে তা তীব্র পানি সংকটে পরিণত হয়। এ বছরও পানি শুকিয়ে ফেলায় বোরো জমিতে সেচ সংকট দেখা দিয়েছে।
মদন পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির জানান, বিলের মালিক উলাদ মিয়া। রহিছ উদ্দিন মেম্বার উলাদ মিয়ার কাছে চাঁদা দাবি করছিল। চাঁদা না পেয়ে সে এমন করছে। এছাড়াও বিলের পানি শুকাইছে কৃষকরা। আমার তো এখানে কোনো ফাংশন নাই।’
মদন থানার ওসি নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসনান জানান, ‘বাইন বিল সেচের বিষয়ে রহিছ উদ্দিন মেম্বার যতবার আমাকে জানিয়েছে ততবার আমি পুলিশ পাঠিয়েছি। কৃষকদের স্বার্থে আমি নিজেও একাধিকবার বিলে গিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অহনা জিন্নাত জানান, এ বিষয়ে আমি কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে রহিছ উদ্দিন মেম্বার আমাকে মোবাইলে অবগত করলে সাথে সাথেই লোক পাঠিয়ে সেচ বন্ধ করিয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব দিতে ওসিকে অবগত করেছিলাম।
নুরুল হক রুনু