আনোয়ার শাহজাহান, লন্ডন:
দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বর্তমানে একটি গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন ষড়যন্ত্র এবং রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব দেশকে বিপদের মুখে ফেলছে। সম্প্রতি পুলিশ বাহিনী এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চক্রান্ত লক্ষ্য করা গেছে, যা একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ। দেশ-বিদেশে একশ্রেণির ষড়যন্ত্রকারী অপপ্রচার চালিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে এবং উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে মাঠপর্যায়ের আন্দোলন পর্যন্ত সবখানে এই উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক নেতা এবং সাধারণ জনগণের উচিত সচেতন থাকা এবং বিভ্রান্তির শিকার না হওয়া।
সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনী একটি স্বাধীন দেশের মূল স্তম্ভ। তাদের দুর্বল করলেই দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে এবং তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে। অতএব, জনগণ, সরকার এবং সুশীল সমাজের এখন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার সময় এসেছে। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও দেশের জাতীয় স্বার্থকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ইতিহাসে এমন অনেক দেশ রয়েছে যেগুলো অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলার সুযোগে ধ্বংস হয়ে গেছে। আমাদের উচিত সেই শিক্ষাকে গ্রহণ করা এবং দেশকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে না দেওয়া। একসাথে কাজ করলে সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব, কিন্তু যদি বিভাজন বাড়ে, তবে দেশ আরও গভীর অস্থিরতায় নিমজ্জিত হবে।
উসকানিমূলক বক্তব্য, গুজব এবং ষড়যন্ত্রের জালে না পড়ে, দেশের স্বার্থে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের ঐক্য এবং সংহতিই এই সংকট থেকে মুক্তির পথ দেখাবে।
অতি বিপ্লবী মনোভাব কখনো কখনো বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিপ্লবের উদ্দেশ্য সাধারণত সমাজে পরিবর্তন আনা, অশান্তি দূর করা এবং সমতা প্রতিষ্ঠা করা, কিন্তু অনেক সময় উত্তেজনা এবং তাড়াহুড়ার কারণে এটি বিপর্যস্ত হতে পারে। বিপ্লবের মধ্যে অতিরিক্ত উত্তেজনা এবং হঠকারী সিদ্ধান্তগুলি সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করে, যা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
বিপ্লবের জন্য প্রয়োজন সংযম, পরিকল্পনা এবং বিচক্ষণতা। পরিবর্তন আনার জন্য উত্তেজনা নয়, বরং বিবেক এবং সঠিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে গঠনমূলক ও শান্তিপূর্ণ পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। উত্তেজনা এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের উদ্দেশ্যকে বিপথগামী করতে পারে, তাই পরিকল্পিত এবং বিচক্ষণ পদক্ষেপ গ্রহণ করে সমাজে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে।
আনোয়ার শাহজাহান
সম্পাদক, আমাদের প্রতিদিন।