কবি, সমাজবিজ্ঞানী ও মানবতন্ত্র প্রবর্তক অধ্যাপক ড. মু. নজরুল ইসলাম তামিজীর জন্মোৎসব রূপ নেয় কবি ও সমাজকর্মীদের এক মিলনমেলায়। সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর কেন্দ্রীয় কচিকাঁচা মিলনায়তনে কবি সংসদ বাংলাদেশ আয়োজিত এ উৎসবে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত প্রায় তিন শতাধিক কবি, সাহিত্যিক ও সমাজসেবী।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রয়েল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. আ. ন. ম. মেশকাত উদ্দীন। প্রধান অতিথি ছিলেন বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ, বিচারপতি মীর হাসমত আলী ও বিচারপতি আলী আসগর খান।
ফুলেল শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন কবি আসাদ কাজল, শিশুসাহিত্যিক আখতার হুসেন, প্রফেসর আমীর হোসেন, কবি তৌহিদুল ইসলাম কনক, জাহাঙ্গীর আলম খান রুস্তম, প্রিন্সিপাল লস্কর নাহার, রহিমা আক্তার, কবি ফারুক মাহমুদ গাজী প্রমুখ। শুভেচ্ছা জানান মুহাম্মদ আবু তাহের, আবদুল গফুর সাগর, আনারুল ইসলাম, মনির হোসেন, কবি রলি আক্তার, কবি মাঈনউদ্দীন, কবি লিটন সিদ্দিকী, অভিনেতা এবি বাদল ও মানবাধিকারকর্মী নাজমুল হাসান মিলনসহ অনেকে। কেক কাটার পূর্বে কবি সংসদ বাংলাদেশ অধ্যাপক ড. মু. নজরুল ইসলাম তামিজীকে ‘মানবতন্ত্র প্রবর্তক’ হিসেবে সম্মানসূচক ফেলো এবং “তামিজী স্যার” উপাধি প্রদান করে।
প্রায় ৫০০ সংগঠন ফুলেল শুভেচ্ছা জানায়। এর মধ্যে জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটি, বাংলাদেশ ল ফাউন্ডেশন, মানবাধিকার সম্মিলিত জোট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সোশ্যাল থিংকিং রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান ও সোশাল পলিসি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, কবি সংসদ বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় সংস্কৃতি জোট উল্লেখযোগ্য। অনুষ্ঠানে মানবতন্ত্র দর্শন ও সাহিত্যচেতনা নিয়ে অধ্যাপক ড. মু. নজরুল ইসলাম তামিজী বলেন, “মানবতন্ত্র কোনো বিমূর্ত দর্শন নয়, এটি মানুষের জন্য মানুষের অস্তিত্বের বিজ্ঞান।
জাতি, ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি—সব বিভাজন অতিক্রম করে মানুষকে তার নিজ মানবিক মর্যাদায় ফিরিয়ে আনার সামাজিক আহ্বানই মানবতন্ত্রের মূল কথা।” তিনি বলেন, “সাহিত্য হচ্ছে মানবতার অন্তর্নিহিত ভাষা। কবিতা, গল্প, উপন্যাস কিংবা প্রবন্ধ—সবই তখনই অর্থবহ, যখন তা মানুষের বেদনা, স্বপ্ন ও মুক্তির কথা বলে। আমি বিশ্বাস করি, একজন কবি কেবল কলমের কারিগর নন; তিনি সমাজের বিবেক, ইতিহাসের অনুবাদক এবং ভবিষ্যতের নির্মাতা। আমাদের সাহিত্যকে মানবিক সমাজগঠনের হাতিয়ার হতে হবে। যখন কলম মানুষের পক্ষে উচ্চারণ করবে, তখনই আমরা প্রকৃত সভ্যতার পথে এগোতে পারব।” তিনি আরও বলেন, “মানবতন্ত্রের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো নৈতিক সাম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। এ পথেই কবি, সমাজবিজ্ঞানী ও সংস্কৃতিকর্মীরা একত্রে মানুষকে তার নিজ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন। মানবতার আলোয় আলোকিত সমাজই হবে আগামী পৃথিবীর চূড়ান্ত রূপ।” বক্তব্যের পর উপস্থিত অতিথিদের উচ্ছ্বাসে ভরে ওঠে অনুষ্ঠানস্থল। কবি ও সমাজকর্মীদের এই মিলনমেলায় মানবতন্ত্রের আহ্বান নতুন উদ্দীপনা ছড়ায় তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও।







