মনির হোসেন, বেনাপোল (যশোর):
সরকার নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে বৈধ লাইসেন্সধারী আগ্নেয়াস্ত্র জমা না দেওয়ায় যশোর জেলার ২৩ জন অস্ত্রধারীর লাইসেন্স বাতিল করেছে জেলা প্রশাসন। ফলে বর্তমানে এদেরকে সরকারিভাবে অবৈধ অস্ত্রধারী হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানাগুলোর অফিসার ইনচার্জদের (ওসি) আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে অস্ত্র আইন, ১৮৭৮ এর ১৮(ক) ধারা এবং ১৯২৪ সালের অস্ত্র বিধিমালা ৪৩ বিধি অনুযায়ী।
জানা গেছে, গত বছরের ২৫ আগস্ট জেলা প্রশাসন ৯ দিনের সময়সীমা নির্ধারণ করে ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও যশোরে ২৩টি অস্ত্র জমা পড়েনি।
লাইসেন্স বাতিলপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন:
অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী ও অন্যান্য পেশার ব্যক্তিবর্গ। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন—মেজর (অব.) সৈয়দ গোলাম মোকাদ্দেস, মেজর (অব.) আলী আকবর, মেজর (অব.) সাব্বির হাসান, সাবেক এমপি ও আওয়ামী লীগের নেতা শাহিন চাকলাদার, নায়েক সিরাজুল ইসলাম, হাবিলদার মহিউদ্দিন, সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার শরিফুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার প্রমুখ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে আরও জানা যায়:
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যশোরে মোট ১,১৩৮টি বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স প্রদান করা হয়। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর ২৩৩টি এবং সাধারণ নাগরিকদের নামে বাকি অস্ত্রগুলো ছিল। যশোর সদর উপজেলায় অস্ত্রের সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি—৬৭৪টি।
অতিরিক্ত তথ্য অনুযায়ী:
এই সময়কালে লাইসেন্স পাওয়া অধিকাংশ ব্যক্তি আওয়ামী লীগের ঘরানার রাজনীতিক ও ব্যবসায়ী ছিলেন। অনেকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ভয় দেখাতে এসব অস্ত্র প্রদর্শন করতেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত খান জানান,
“বেশিরভাগ অস্ত্রই জমা হয়েছে। যেগুলো জমা হয়নি, সেগুলোর লাইসেন্স বাতিলের পর সিনিয়র কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে সাবেক এমপি শাহিন চাকলাদারের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে।”