জবি প্রতিনিধি:
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কোনো ব্যক্তির নাম উল্লেখ না করে জবি ছাত্রদলের চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করে লেখালেখি করায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইতিহাস বিভাগের শাহিন মিয়ার নামে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ তুলে মামলা করেছেন শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক (পদ স্থগিত) ওমর ফারুক।
গত রবিবার (১৩ এপ্রিল)কোতোয়ালী থানা সূত্রে এ বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। জানা যায়, কোতয়ালী থানায় শাহিন মিয়া নামে একজনের বিরুদ্ধে মানহানীর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে শাহিনের ফেসবুক পোস্টের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থী মিলে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে ‘খাওন দাওন’ নামে একটি খাবারের দোকান চালু করেন। প্রাথমিকভাবে ব্যবসা ভালো চললেও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পরীক্ষার কারণে সাময়িকভাবে দোকান বন্ধ রাখা হয়। এ সুযোগে জবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ বিন হাসিম ও ওমর ফারুক দোকানের জায়গা দখলের চেষ্টা করেন এবং প্রতিদিন ৫০০ টাকা চাঁদা দাবি করেন বলে ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ জানান নৃবিজ্ঞান বিভাগের দোকানী ও ভুক্তভোগীরা।
এ নিয়ে গত ২৫ মার্চ শাহিন মিয়া ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, প্রতিদিন নাকি খাওন-দাওন নামে দোকানের শিহাবসহ পাঁচ বন্ধুর কাছে ৫০০ টাকা করে চেয়েছেন। শিহাব নিজেও একজন ছাত্রদলের কর্মী। এই ছেলেটা জুলাই আন্দোলনের সামনের সারির একজন যোদ্ধা। অথচ তার কাছেই আজ ছাত্রদলের অন্য গ্রুপের লোকেরা চাঁদা দাবি করে। কতটা ছোটলোক হলে একজন সিনিয়র তার ছোট ভাইয়ের কাছে চাঁদা দাবি করে!! একজন রানিং ব্যাচের শিক্ষার্থীর কাছে চাঁদা দাবি করে এমন একজন, যার এখন ছাত্রত্ব নেই।
তিনি আরো লিখেছিলেন, ছাত্রদল ক্ষমতায় আসার আগেই এরা নিজের দলের লোকজনের কাছেই চাঁদাবাজি শুরু করছে। তাহলে যারা সাধারণ, তারা কতটা নিরাপদ এদের কাছে!!?
পোস্টের বিষয়ে শাহীন মিয়া বলেন, পোস্ট করার কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের ওমর ফারুক ভাই (আমি তাকে চিনিও না ভালো করে) আমার নামে পুলিশে মানহানির অভিযোগ দায়ের করেছেন । অথচ অভিযোগ দেওয়ার কথা ছিল শিহাবের। কারণ ওর দোকান উঠিয়ে দিয়েছিল। তিনি আরও বলেন, ১০০ বার চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কথা বলবো। তাতে যদি আমার ফাঁসি হয় হবে; মাথা পেতে মেনে নেব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পদ স্থগিত থাকা জবি ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ওমর ফারুক বলেন,আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে অভিযোগ করেন তারা। আমি রাজনৈতিক ও পারিবারিকভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছি। আমি এজন্যই মানহানির অভিযোগ করেছি। পুলিশ এই বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করবে। যদি তাদের অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে আমি সব মেনে নিব, আর যদি অভিযোগ প্রমানিত করতে না পারে তাহলে আমি মামলা প্রত্যাহার করবো না।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের খাবারের দোকান দখল, চাঁদাবাজির অভিযোগে ওমর ফারুক সহ মোট তিন জনকে শোকজ করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। পরবর্তীতে ২৮ মার্চ থেকে এক মাসের জন্য তাদের সাংগঠনিক পদ স্থগিত করে দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।