আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই-আগস্ট গণহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে এই সিদ্ধান্ত দেয় ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ১৬ জুন। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাকে ‘প্রধান নির্দেশদাতা’ হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ মামলায় আরও অভিযুক্ত রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
মামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে দাখিল করা অভিযোগপত্রটি ১৩৫ পৃষ্ঠার। তবে অভিযোগ প্রমাণে ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়া হয়েছে মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার বিশাল নথিপত্র, যেখানে রয়েছে বিভিন্ন দালিলিক প্রমাণ, অডিও-ভিডিও কল রেকর্ড এবং সময়ানুগ আলামত। এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী হিসেবে পেশ করেছে মোট ৮১ জনকে।
রবিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্র দাখিলের শুনানি শুরু হয়। এ সময় পুরো কার্যক্রম রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) সরাসরি সম্প্রচার করা হয়, যা বাংলাদেশের বিচারিক ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ ধরনের মামলায় সরাসরি সম্প্রচারের সিদ্ধান্তকে অনেকে স্বচ্ছতার নতুন দিক হিসেবে দেখলেও, এটি রাজনৈতিকভাবে ব্যাপক বিতর্ক এবং আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বহুল আলোচিত জুলাই-আগস্ট গণহত্যাকে কেন্দ্র করে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের উপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। ট্রাইব্যুনালের এ ধরনের পদক্ষেপ শুধু বিচারিক দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, আন্তর্জাতিক মহলেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে বলেও মনে করছেন মানবাধিকার এবং কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।