টেলিভিশনের ঝলমলে পর্দার বাইরে এখন একেবারে ভিন্ন এক বাস্তবতায় সাংবাদিক ফারজানা রুপা। এক সময়কার আলোচিত এই সংবাদ উপস্থাপক বুধবার আদালতে হাজির হন সাধারণ চেহারায়—পায়ে সাদামাটা স্যান্ডেল, গায়ে ছাপা করা মলিন মেরুন সালোয়ার-কামিজ, মাথায় ছোট্ট খোপায় বাঁধা লাল ব্যান্ড।
গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসা রুপা ও তার স্বামী, সাংবাদিক শাকিল আহমেদ বর্তমানে রয়েছেন কাশিমপুর কারাগারে। তবে নারী ও পুরুষদের জন্য আলাদা ভবন হওয়ায় দীর্ঘদিন একে অপরের সঙ্গে দেখা হয়নি তাদের।
বুধবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমানের আদালতে রিমান্ড ও গ্রেপ্তার সংক্রান্ত শুনানির জন্য একসঙ্গে হাজির করা হয় এই সাংবাদিক দম্পতিকে। কাঠগড়ায় দীর্ঘদিন পর পরস্পরের মুখোমুখি হন রুপা ও শাকিল। এ সময় শাকিলের পরনে ছিল ধূসর-কালো রঙের একটি টি-শার্ট। তারা একে অপরের হাত ধরে কাঠগড়ার পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলেন, যেন কিছু সময়ের জন্য হলেও পেয়ে গেলেন মুক্তির স্বাদ।
তাদের আড্ডায় পরে যোগ দেন একাত্তর টেলিভিশনের সিইও মোজাম্মেল হক বাবু। তিনি রুপার সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেন। কিছুক্ষণ পর সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম এগিয়ে আসেন রুপার দিকে এবং স্নেহভরে তার মাথায় হাত রাখেন। এরপর তার সঙ্গেও রুপার কিছুক্ষণ আলাপ হয়।
শুনানি শেষে আদালত একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ইমরান হাসান হত্যাকাণ্ডের মামলায় মোজাম্মেল হক বাবু, শাকিল আহমেদ এবং ফারজানা রুপাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পাশাপাশি দনিয়া এলাকায় মাদ্রাসা ছাত্র হত্যার ঘটনায়ও রুপা ও শাকিলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার দেখায় আদালত।
শুনানি শেষে তাদের আদালত প্রাঙ্গণের হাজতখানায় নেয়া হয় এবং পরে পুনরায় পাঠানো হয় কারাগারে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২১ আগস্ট ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রুপা ও শাকিলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর একাধিক মামলায় বিভিন্ন সময় তাদের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।