এস এম হাবিবুল হাসান, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার সাবেক জেলা প্রশাসক ও বর্তমান পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীরসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে বুলডোজার দিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে তদন্ত সাপেক্ষে মামলা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৬ মে) দুপুরে সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মায়নুদ্দিন ইসলাম এ আদেশ দেন। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শাকরা কোমরপুর এলাকার বৈচনা গ্রামের বাসিন্দা মো. ওবায়দুল্যাহ বাদী হয়ে আদালতে এজাহারটি দাখিল করেন। এজাহারে তিনি এক কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ও সাতক্ষীরা বার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক জানান, ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে ওবায়দুল্যাহর বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সে সময় মামলা দায়েরের চেষ্টা করলেও পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। দীর্ঘ ১৫ বছর পর ক্ষতিপূরণ এবং আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আদালতের শরণাপন্ন হন তিনি।
এজাহারে উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— সাবেক ডিসি নাজমুল আহসান, সাবেক এসপি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কাজী মনিরুজ্জামান, সদর থানার সাবেক ওসি মো. ইনামুল হকসহ পুলিশের আরও ১৫ কর্মকর্তা ও সদস্য এবং আওয়ামী লীগের ১০ নেতাকর্মী।
রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে আসামি করা হয়েছে— সাবেক ভোমরা ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল গফুর, সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম শহিদুল ইসলাম, আব্দুল মোমিন গাজী, আব্দুল গনি, কওছার আলীসহ আরও কয়েকজনকে।
বাদী মো. ওবায়দুল্যাহ বলেন, “২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি, তৎকালীন সরকারের পেটোয়া বাহিনী আমার বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় এবং লুটপাট চালায়। ওই ঘটনার মূল নেতৃত্বে ছিলেন তৎকালীন ডিসি নাজমুল আহসান। এ সময় সাতক্ষীরায় সংঘটিত রাজনৈতিক সহিংসতায় ৪৩ জন নিহত হন, যার মধ্যে ২৭ জন যৌথবাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান। নিহতরা সবাই বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, জামায়াত ও শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।”
আদালত বাদীর এজাহার আমলে নিয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।