সিলেট
মধ্যনগরে সড়কে চাঁদাবাজির কান্ডে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষে পথচারী নিহত,ওসির দাবি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু!
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর সীমান্ত সড়কে কয়লা চুনাপাথর বাহি গাড়ি আটকে চাঁদাবাজির কান্ডে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপি- ছাত্রদলের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে মোহাম্মদ আলী (৬২) নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন।
সংঘর্ষে ব্যবসায়ী, পথচারী, বাজারের আসা ক্রেতা সহ বিবাদমান বিএনপি ছাত্রদলের দু’গ্রপের কমপক্ষে ৩০ থেকে ৩৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেলেও তাৎক্ষণিক ভাবে আহতদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সোমবার (১০ মার্চ) সন্ধ্যায় মধ্যনগরের সীমান্ত বাজার মহিষখলায় সংঘর্ষের ঘটনায় ওই পথচারী নিহত হন।
নিহত মোহাম্মদ আলী মহিষখলার হোসেনপুর গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে।
সোমবার রাতে মধ্যনগর থানার ওসি মো. সজীব রহমান দাবি করেন, নিহত মোহাম্মদ আলী সংঘর্ষের ঘটনায় নয় বরং হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন।
সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে সোমবার সন্ধায় মহিষখলা বাজারে থাকা একাধিক ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তাহিরপুরের বড়ছড়া, চারাগাঁও, বাগলী স্থল শুল্ক ষ্টেশন থেকে মহিষখলা সীমান্ত সড়ক পথে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা চুনাপাথর ও কয়লা পরিবাহি গাড়ি থেকে গত কয়েকমাস ধরে চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে বিএনপির স্থানীয় ছাত্রদল নেতা হারুনুর রশীদ গ্রুপ ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা হযরত আলী এ দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।
সোমবার সন্ধ্যায় মহিষখলা বাজারে দু’গ্রুপের মধ্যে বাক-বিতন্ডা তৈরীর পর হযরত আলী গ্রুপের সদস্যরা হারুন গ্রুপের সদস্যদের ধাওয়া করে। প্রথম দফায় ধাওয়ার মুখে হারুন গ্রুপের সদস্যরা পালিয়ে যায়।
দ্বিতীয় দফায় ইফতারের পরপরই ছাত্রদল নেতা হারুন গ্রুপের শতাধিক সদস্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সজ্জিত মহিষখলা বাজারে অবস্থান নিয়ে এসে হযরত আলী গ্রুপের সদস্যদের সাথে সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষ চলাকালে বাজারে থাকা উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা পথচারী মোহাম্মদ আলী কোন এক গ্রুপের দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
অভিযোগ রয়েছে উপজেলার মহিষখলা সীমান্ত সড়কে কয়লা –চুনপাথর পরিবাহি গাড়ি থেকে সড়ক পথ মেরামতের খরচের আড়ালে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বছরের পর বছর ধরে চাঁদা আদায় করা হচ্ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার পতিত হওয়ার কয়েকমাস পুর্বেই ওই সীমান্ত সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে যায়।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিএনপির ঘরানার কিছু নেতাকর্মী থানার ওসি সজীব রহমানের মদদে ফের সীমান্ত সড়কে কয়লা চুনাপাথর বাহি গাড়ি আটকে চাঁদা আদায় করতে থাকেন নির্বিগ্রে।
এলাকাবাসীর দাবি চাঁদাবাজির ঘটনা আড়াল করতেই সংঘর্ষে নিহত নিরীহ পথচারী মোহাম্মদ আলী হত্যাকান্ডের ঘটনা ধামাচাঁপা দিতে ওসি সজীব নিজেই হত্যাকান্ডকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে নতুন করে আরো একটি জজ মিয়া নাটক তৈরী করছেন।
সোমবার দিবাগত রাতে মধ্যনগর থানার ওসির নিকট সীমান্ত সড়কে চাঁদাবাজি, সংঘর্ষ, পথচারী নিহতের প্রসঙ্গে পুন:রায় জানতে চাইলে ওসি মো. সজীব রহমান সংঘর্ষে বিএনপি-ছাত্রদলের কয়েকজন আহত হয়েছেন স্বীকার করলেও সীমান্ত সড়কে চুনাপাথর কয়লা পরিবাহি গাড়ি আটকে চাঁদা আদায়ের প্রসঙ্গ কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে বললেন, সীমান্ত সড়কে চাঁদাবাজির সাথে আমার (ওসি) বা থানা পুলিশের কোন ধরণের সম্পৃক্ততা নেই।
মোহাম্মদ আলী সংঘর্ষের ঘটনায় নয় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন কিভাবে নিশ্চিত হলেন? জানতে চাইলে ওসি বললেন আমি এমন কথা বলিনি, নিহতের পরিবারের লোকজন এমনটি দাবি করছেন।