সত্যজিৎ দাস (মৌলভীবাজার প্রতিনিধি):
মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য, তরুণ ও প্রতিশ্রুতিশীল আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুজন মিয়ার নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মৌলভীবাজারে উত্তাল হয়ে উঠেছে আইনজীবী মহল। সোমবার (৭ এপ্রিল ২০২৫) আইনজীবী সমিতির ব্যানারে কোর্ট বর্জনের পাশাপাশি বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন এবং জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
সকাল ১১টার দিকে মৌলভীবাজার জেলা বারের সামনে মানববন্ধন শুরু হয়। এতে শতাধিক আইনজীবী অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের চৌমোহনা,সেন্ট্রাল রোড, পুরাতন হাসপাতাল রোডসহ প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় জেলা বারের সামনে এসে শেষ হয়।
বক্তব্য রাখেন; সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোম সুজিবুর রহমান, অ্যাডভোকেট শান্তি পদ ঘোষ, অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ, অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট বকসী জুবায়ের আহমেদ, অ্যাডভোকেট রমাকান্ত দাশ গুপ্তসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন,“এটি শুধু একজন আইনজীবীর মৃত্যু নয়,এটি একটি প্রতিষ্ঠানের ওপর সশস্ত্র আঘাত। এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় আইনজীবী সমাজ আরও কঠোর ও লাগাতার কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।”
পরে জেলা আইনজীবী সমিতির একটি প্রতিনিধিদল মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে পৃথকভাবে স্মারকলিপি প্রদান করে। স্মারকলিপিতে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার,দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা পরিচালনা এবং শহরে কিশোর গ্যাং দমনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
উল্লেখ্য,রোববার (৬ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে মৌলভীবাজার পৌরসভার সামনে একটি ফুচকার দোকানের সামনে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা অ্যাডভোকেট সুজন মিয়াকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত অ্যাডভোকেট সুজন মিয়া শহরের পূর্ব হিলালপুর এলাকার বাসিন্দা এবং মো. জহিরুল ইসলামের পুত্র। তিনি একজন নিষ্ঠাবান ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন আইনজীবী হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের কারণ এখনো স্পষ্ট নয়,তবে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে—ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিশোর গ্যাং সদস্যদের শনাক্তের কাজ চলছে এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
অ্যাডভোকেট সুজন মিয়ার অকাল মৃত্যুর ঘটনায় মৌলভীবাজার জেলার সর্বস্তরে শোক ও ক্ষোভের ছায়া নেমে এসেছে। আইনজীবী সমাজ একে “আইনের শাসনের ওপর নগ্ন হামলা” হিসেবে দেখছে।