প্রতিবেদক, জয়পুরহাট :
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় সরকারি চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বেকার তরুণদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি প্রতারক চক্র। অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন আওড়া পূর্বপাড়ার মৃত আকবর আলীর ছেলে খাজের আলী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিজেকে সরকারি প্রতিষ্ঠানের এমডি ও সিও পরিচয় দিয়ে খাজের আলী সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে চলেছেন। সাবেক আওয়ামী লীগ কর্মী হিসেবে পরিচিতি কাজে লাগিয়ে প্রভাব খাটান তিনি।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে অন্তত ১৬ লাখ টাকার প্রতারণার তথ্য অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। ভুক্তভোগী তানিয়া নামের এক তরুণী জানান, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে চাকরি দেওয়ার নাম করে খাজের আলী ও তার প্রতিনিধি মাসুদ রানা তার কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা নিয়েছেন। টাকার বিনিময়ে রিটেন ও ভাইভা নেওয়ার প্রমাণ থাকলেও শেষমেশ কোনো চাকরি মেলেনি।
আরেক ভুক্তভোগী, দিনমজুর আব্দুল হামিদ বলেন, “আমার ছেলেকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে আমাকে জোর করে বাড়িতে আটকে রেখে ৭ লাখ টাকা আদায় করে। আমি ভয় পেয়ে জমি ও গরু বন্ধক রেখে টাকা দিই।”
ভুক্তভোগীদের কাছে থাকা কল রেকর্ড ও তথ্য এই প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।
অভিযুক্ত খাজের আলী অবশ্য সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমাকে সমাজে হেয় করার ষড়যন্ত্র চলছে। আমি কোনো চাকরি দিতে পারি না।”
জয়পুরহাট জেলা বার সমিতির আইনজীবী রায়হান আলী বলেন, “এটি স্পষ্ট প্রতারণা। ভুক্তভোগীরা চাইলে থানায় মামলা করতে পারেন। আইন অনুযায়ী তারা সুরক্ষা পাবেন।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, “২৬ বছর ধরে পড়াশোনা করে অর্জিত ডিগ্রির কোনো মূল্য নেই যখন প্রতারকরা চাকরির নামে বেকারদের সর্বস্ব কেড়ে নেয়। প্রশাসনের উচিত দ্রুত এই চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতারকদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ ছাড়া এ ধরনের অপরাধ বন্ধ করা সম্ভব নয়। প্রতারিতদের উচিত আর দেরি না করে আইনের আশ্রয় নেওয়া।