মুহাম্মদ মহসিন আলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া:
চট্টগ্রামে স্ত্রীকে ১১ টুকরো করে হত্যার ভয়াবহ ঘটনায় প্রধান আসামি সুমন (৩৫) অবশেষে গ্রেফতার হয়েছেন। শুক্রবার (১১ জুলাই) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে র্যাব-৯ ও র্যাব-৭ এর যৌথ অভিযানে তাকে আটক করা হয়।
সুমনের বাড়ি কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার সোয়া সুন্দর আলী এলাকায়। গ্রেফতারের পর তাকে সংশ্লিষ্ট থানার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে র্যাব।
উল্লেখ্য, গত ৯ জুলাই রাতে চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন রৌফাবাদ পাহাড়িকা হাউজিং সোসাইটির একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে স্ত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করেন সুমন। ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুনের পর স্ত্রীকে ১১ টুকরো করে লাশ ঘরের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রাখেন।
ঘটনার রাতে ফ্ল্যাটে অস্বাভাবিক আচরণ, দুর্গন্ধ ও টয়লেট ফ্লাশের শব্দে সন্দেহ করেন ভবনের নিরাপত্তাকর্মী মশিউর রহমান। তিনি সুমনের ফ্ল্যাটে গিয়ে ডাকাডাকি করলে প্রায় আধা ঘণ্টা পর দরজা খুলে দেন সুমন।
তবে সুমনের সন্দেহজনক আচরণ এবং বাসায় প্রবেশে বাধা দেওয়ায় মশিউর জোরপূর্বক ঘরে প্রবেশ করেন। এ সময় তিনি ঘরের মেঝে, বিছানা ও কমোডে রক্ত, রক্তমাখা কাপড় এবং মাংসের টুকরো দেখতে পান।
তাৎক্ষণিকভাবে মশিউর ঘরটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে নিচে সহায়তার জন্য ছুটে যান। সেই সুযোগে সুমন ফ্ল্যাটের গ্রিল ভেঙে পালিয়ে যান।
পরবর্তীতে বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে স্ত্রীর খণ্ড-বিখণ্ড মরদেহ উদ্ধার করে। নিহতের বড় ভাই আনোয়ার হোসেন রুবেল ১০ জুলাই বায়েজিদ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর: ২০/২০২৫; ধারা: ৩০২/২০১, দণ্ডবিধি ১৮৬০)।
এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড চট্টগ্রামজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। অভিযুক্ত সুমনের গ্রেফতারে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী। তদন্ত ও বিচারিক কার্যক্রমের দ্রুত অগ্রগতি কামনা করছেন সংশ্লিষ্টরা।