বাসদেব রায়, নীলফামারী প্রতিনিধি.
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (টিসিএফ) মোঃ রুহুল মোসাদ্দেকের বিরুদ্ধে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগের উৎকোচ গ্রহণ ও আওয়ামী লীগের নেতাদের পুনর্বাসনসহ ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উছেছে। অভিযোগ উঠেছে অর্থের বিনিময়ে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের ডিলার নিয়োগ করা হয়।
জানা যায়,‘ ডিমলা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির জন্য ৪২ জন ডিলার নিয়োগ করা হয়। হাসিনুর রহমান শাহ নামের একজন ডিলারের মৃত্যু ও ৪ জন ডিলার উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে থাকার ফলে গত ৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনের পর আওয়ামীলীগের পদ পদবীতে থাকা অনেক ডিলার মামলার আসামী হয়ে গাঁ ঢাকা দিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
এরই মধ্যে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোসাদ্দেকের ঘুষ বাণিজ্য ও অপকর্মের বিষয়ে উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ গত ১৩ মার্চ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করে। অভিযোগ উঠেছে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পদে থাকা ডিলারদের পুনর্বাসন করার জন্য প্রত্যেক ডিলারের বিভিন্ন পরিমানের উৎকোচ বাবদ আদায় করেন।’
উপজেলার ঝুনাগাছা চাপানী ইউনিয়নের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার আব্দুস সালাম, মনিরুজ্জামানা মানিক, কনেশ্বর রায় ও শফিউদ্দিন মানিক জানান,‘গত ৫ আগষ্টের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোসাদ্দেক তাদের কাছে টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলের ডিলারশিপ বাতিল করার হুমকি প্রদান করেন। বাধ্য হয়ে তারা বিভিন্ন সময়ে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা উৎকোচ খাদ্য নিয়ন্ত্রককে প্রদান করেন।’
স্থানীয় জহির উদ্দিন নামে এক ব্যবসায়ী বলেন,‘ওএমএসের ডিলার হিসেবে আমাকে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে আমার কাঝে গত ডিসেম্বর মাসে এক লাখ টাকা নেয় টিসিএফ। টাকা নেওয়ার পরও নিয়োগ দেয় না। শুধু তালবাহানা করে। আবার চলতি মাসে মাসে ৫৫ হাজার টাকা নেয়।’
খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের নওয়াব আলী নামে এক ব্যক্তি বলেন,‘টিসিবি খাদ্য সামগ্রী প্রদানের ডিলার নিয়োগ দেবার কথা বলে আমার কাছে মোবাইল ব্যাংকিং নগদের মাধ্যমে ১৫ হাজার টাকা ও সরাসরি ২০ হাজার টাকা নেয়।’
জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র রাশেদুজ্জামান রাশেদ অভিযোগ করে বলেন, ‘ডিমলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুহুল মোসাদ্দেক ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে ফ্যাঁসিবাদ আওমীলীগ সরকারের নেতাদের পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছেন। বর্তমানে তিনি ডিমলা উপজেলার পলাতক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এজেন্ডা হিসেবে কাজ করছেন।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুহুল মোসাদ্দেক বলেন, ‘খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার। তিনি রংপুরে আছেন, সেখান থেকে ফিরলে আমার বক্তব্য জানাবো। তবে আমাকে একটি মহল ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।’
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাসেল মিয়া বলেন, ‘খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।’ জানতে চাইলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সৈয়দ আতিকুল হক বলেন,‘ ওই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে ঘুষ গ্রহনের বিষয় প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’