শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে সোহেল রানা (২৫) নামে একজন ভিসা ও থাই লটারি প্রতারককে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাত ২টার দিকে বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের খোর্দ্দ বোতলাগাড়ী হাজীপাড়ায় মৃত আন্তঃজেলা ডাকাত মোনাফ আলী সরকারের বাড়িতে এ অভিযান চালানো হয়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চালানো এ অভিযানে সোহেল রানার মূল সহযোগী মাহামুদ হাসান রকি (২৬) পালিয়ে গেলেও, সোহেল রানাকে现场 থেকে আটক করে সেনাবাহিনী। অভিযানে নেতৃত্ব দেন সেনা ক্যাম্পের মেজর জোবায়ের বিন জহির। সহায়তায় ছিল সৈয়দপুর থানা পুলিশ।
অভিযানকালে রুম তল্লাশি করে উদ্ধার করা হয়:
- ২টি বড় ছোরা ও ২টি চাকু
- আনুমানিক ১০ গজ সেনাবাহিনীর পোশাক তৈরির কাপড়
- একটি এসার ল্যাপটপ
- ১৩টি অ্যান্ড্রয়েড ও ৪টি বাটন মোবাইল
- ১০টি বিভিন্ন কোম্পানির সিম
- দুটি পাসপোর্ট
- ৯টি স্বাক্ষরকৃত ফাঁকা নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প
- একটি লাইসেন্সবিহীন সুজুকি R15 মোটরসাইকেল
আটক সোহেল রানা নীলফামারী সদর উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের বেড়াকুটি গ্রামের আখতারুজ্জামান বাবুর ছেলে। তিনি নিজেকে ‘জিয়া মঞ্চ’ নামক রাজনৈতিক সংগঠনের নীলফামারী জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিলেও সংগঠনের আহ্বায়ক গোলাম শামীম একে সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করেন। তিনি বলেন, “আমাদের এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, এমন কোনো পদও নেই। কেউ অপকর্ম করলে তা তার ব্যক্তিগত, সংগঠন দায় নেবে না।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য বজলুল করিম পাখি জানান, “সোহেল রানার পরিবার আগে দিনমজুর ছিল, এখন হঠাৎ অর্থবিত্তের মালিক। এ সম্পদ বৈধ নয় বলেই সন্দেহ।”
উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল হক শাহ বলেন, “সেনাবাহিনী যে কারণে আটক করেছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণিত হলে যথাযথ বিচার দাবি করি।”
সৈয়দপুর থানার ওসি ফইম উদ্দিন বলেন, “সেনাবাহিনীর হেফাজত থেকে একজনকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে, বিস্তারিত শিগগির জানানো হবে।”
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত মাহামুদ হাসান রকি এর আগেও মাদক ও প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল বলে জানা গেছে। আটক সোহেল রানা বর্তমানে ওই চক্রের সক্রিয় সদস্য এবং অন্যতম হোতা হিসেবে চিহ্নিত।