মনোয়ার বাবু, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ৪ নং ঘোড়াঘাট ইউনিয়নের ২ নং ইউপি সদস্য নাহিদুল ইসলাম(৬০) ও তাঁর ছেলে জিহাদ মিয়াকে (৩২) ধর্ষণ চেষ্টা ও মারপিটের মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার খোদাদাতপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক। তিনি বলেন, খোদাদাতপুরের এক নারী আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ইউপি সদস্য নাহিদুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে জিহাদ মিয়ার বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন। পরে বিজ্ঞ আদালত এজাহারটি আমলে নিয়ে থানায় মামলা রুজুর নির্দেশ প্রদান করেন। সেই এজাহারের প্রেক্ষিতে তাঁদের গ্রেপ্তার করে আজ বুধবার সকাল ১১ টার দিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী ও পরিচিত হওয়ায় প্রায়ই ইউপি সদস্যের ছেলে জিহাদ মিয়া ভুক্তভোগী ওই নারীর বাড়িতে আসা-যাওয়া করতো। একদিন বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে জিহাদ মিয়া তাকে কুপ্রস্তাব দেয়। সেসময় ওই নারী তাঁর বাড়িতে যাতে আর জিহাদ না আসে সে জন্য নিষেধ করেন। কিন্তু তারপরও ইউপি সদস্যের ছেলে জিহাদ ভুক্তভোগী নারীকে রাস্তা-ঘাটে বিরক্ত করতে থাকে। বিষয়টি ওই নারী তাঁর স্বামীকে জানালে জিহাদ আরও রেগে যায়। গত বুধবার (২ এপ্রিল) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে ভুক্তভোগীর বাড়িতে যান ইউপি সদস্যের ছেলে জিহাদ মিয়া। এসময় ভুক্তভোগীর বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে জিহাদ মিয়া তাকে ঘরে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে কৌশলে সে পালিয়ে যায়।
এঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরের দিন বৃহস্পতিবার ইউপি সদস্য নাহিদুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে জিহাদ মিয়া ভুক্তভোগী নারীর বাড়িতে এসে ওই নারীকে গালিগালাজ করতে থাকেন। এসময় ওই নারী প্রতিবাদ করলে লাঠি দিয়ে দুই জন মিলে এলোপাতাড়ি তাকে পিটাতে থাকে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করার চেষ্টা করে। সেসময় তাঁর স্বামী বাসায় ফিরে আসেন। তাঁর স্বামীর ডাক চিৎকারে এলাকার লোকজন আসলে ইউপি সদস্য ও তাঁর ছেলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। সেসময় ওই নারী কে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়। পরে, বাধ্য হয়ে ওই গৃহবধূ তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার একাধিক বাসিন্দা বলেন, নাহিদুল ইসলাম এবার দিয়ে পাঁচ বারের ইউপি সদস্য। এলাকায় তাঁর একটা আলাদ জনপ্রিয়তা আছে। শত্রুতার বশবর্তী হয়ে অন্যায় ভাবে কাউকে যেন হেনস্তার স্বীকার হতে না হয়। তাছাড়া শুনেছি ইউপি সদস্যের ছেলে জিহাদ মিয়া ওই নারীকে নাকি মারপিট করেছে।