মনোয়ার বাবু, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
বিদেশি জমকালো ডিজাইনের সব পোষাক, অনলাইন পেইজে চটকদার সব বিজ্ঞাপন! ফাঁদে পা দিয়ে অর্ডার করে অগ্রিম টাকা দিলেই আর খোঁজ মিলে না তাদের। এমন প্রতারণার শিকার হয়েছে একই স্কুলের ৫৬ শিক্ষার্থী।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌরশহরের আর.সি.পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে অনলাইনে পোশাক কিনতে গিয়ে ঘটেছে এমন প্রতারণা।
জনপ্রিয় হয়ে উঠা অনলাইন কেনাকাটায় ঢুকে গেছে প্রতারক চক্র। অল্প বয়সী নারীরায় যাদের প্রধান টার্গেট। নামি দামি ব্র্যান্ডের পেইজ বা গুগল থেকে নজরকারা নানা ছবি ডাইনলোড করে নিজেদের পেইজে দিয়ে তারা ক্রেতা আর্কষণের চেষ্টা চালায়। মূল পেইজ গুলোতে পোশাকের যে দাম তার অর্ধেক বা আরও কম দামেই সে পণ্যে বিক্রির অফার দেয়। অর্ডারের সময় অগ্রিম টাকা দিতে হয়। টাকা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হয় ক্রেতাকে ব্লক করা হয়, না হয় ক্রেতাকে দেওয়া হয় নিম্ন মানের পণ্য। কখনো কখনো পরিবর্তন কথা বলা হলে তা আর করা হয়না।
জানাযায়, ওই স্কুলে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান উপলক্ষে ১০ম শ্রেণীর ৫৬ শিক্ষার্থী একই ড্রেস নেওয়ার জন্য lmanni Surahin Tuba (ইমানি সুরাহিন তুবা) নামে ফেসবুক আইডিতে অনলাইন অর্ডার দেন। প্রতি পিচ ড্রেসের দাম ধরা হয় চারশত টাকা। এ সময় 01885-547801 নাম্বার থেকে ফোন করে অগ্রিম টাকা চাওয়া হয়। ছাত্রীরা সরল বিশ্বাসে ওই নাম্বারে বিকাশে সমস্ত টাকা দিয়ে দেয়। ২২ হাজার ৪শত টাকা গ্রহণ করার পর ছাত্রীরা যোগাযোগের চেষ্টা করলে ওই নাম্বারটি যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আল-মামুন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে, পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুস সাত্তার মিলন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুক্তার হোসেন এবং থানার ওসির সহযোগিতায় ওই প্রতিষ্ঠার ৬০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে একই রং এর ড্রেস উপহার দেওয়ার হয়।
প্রতারণার শিকার শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা একই ক্লাসের ৬০ জনের মধ্যে ৫৬ জন অনলাইনে একই ড্রেস কেনার জন্য টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়েছি। এতে সবার মন খারাপ হয়ে যায়। পরে আবার আমরা নতুন ড্রেস উপহার হিসাবে পেয়েছি। না হলে আজকের (সোমবার) বিদায় অনুষ্ঠানটি নিরানন্দে পরিণত হত।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুক্তার হোসেন বলেন, প্রতারক চক্র কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করেছে। শুনে খুব খারাপ লেগেছে। পরে তাদের পোশাকের ব্যবস্থা করে দিতে পেরে নিজেকে খুব ভালো লাগছে।
সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুস সাত্তার মিলন জানান, বিষয়টি শুনার পর আমি খুব মর্মাহত হয়। পরে তাদের সাথে কথা বলি এবং বিদায় অনুষ্ঠান তারা যাতে নতুন ড্রেস পরে তাদের বড় আপুদের বিদায় জানাতে পারে সেই ব্যবস্থা করি।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক জানান, প্রতারণার বিষয়ে একটা অভিযোগ পেয়েছি। প্রতারক চক্রটিকে ধরতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।