বিশেষ প্রতিবেদকঃ
গাইবান্ধায় কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দলবদ্ধ হয়ে তারা পথচারীদের আটকাচ্ছে, মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিচ্ছে এবং নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে মুক্তিপণ আদায় করছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় ছত্রছায়ায় থেকে এই গ্যাং সদস্যরা দিনের পর দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে, কিন্তু প্রশাসনের কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।
সাংবাদিককেও ছাড় দেয়নি কিশোর গ্যাং। গতকাল ১৭।০২।২৫ তারিখ সন্ধ্যায় গাইবান্ধা শহরের ব্যস্ত এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার হয়েছেন সাংবাদিক মাসুম পারভেজ। জানা গেছে, কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে কয়েকজন কিশোর তাকে ঘিরে ধরে এবং অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোবাইল কেড়ে নেয়। পরে তাকে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আদায়ের পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক মাসুম পারভেজ বলেন, “আমি অফিস থেকে ফেরার পথে হঠাৎ কয়েকজন কিশোর আমাকে ঘিরে ধরে। প্রথমে মোবাইল কেড়ে নেয়, এরপর নির্জন জায়গায় নিয়ে যায়। পরে পরিবারের কাছ থেকে টাকা দাবি করে। টাকা পাঠানোর পর আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।”
সাধারণ মানুষ আতঙ্কে, প্রশাসন নীরব!
সাধারণ মানুষের অভিযোগ, কিশোর গ্যাংয়ের তাণ্ডবে শহরে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। দোকানদার, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী কেউই নিরাপদ নয়। সন্ধ্যার পর রাস্তায় চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এক পথচারী বলেন,
“আমরা রাস্তায় বের হলেই আতঙ্কে থাকি। কখন কার ব্যাগ, মোবাইল ছিনিয়ে নেয় বলা যায় না। প্রতিদিনই কেউ না কেউ এদের শিকার হচ্ছে।”
পুলিশ কি বলছে?
এ বিষয়ে গাইবান্ধা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)র সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
রেহাই পেতে যা করা জরুরি:
১. নিয়মিত পুলিশি টহল বাড়াতে হবে – অপরাধপ্রবণ এলাকায় কড়া নজরদারি করতে হবে।
২. সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন – গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসিটিভি বসিয়ে অপরাধীদের শনাক্ত করতে হবে।
৩. অভিভাবকদের সতর্ক হওয়া – কিশোরদের অপরাধের পথে যেতে বাধা দিতে পরিবারকেই উদ্যোগ নিতে হবে।
৪. জরুরি হেল্পলাইন চালু করা – সাধারণ মানুষ যাতে দ্রুত পুলিশের সাহায্য পায়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. মিডিয়া ও নাগরিকদের সরব হওয়া – প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
গাইবান্ধার মানুষ এখন প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের অপেক্ষায়। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কিশোর গ্যাং আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মাসুম পারভেজ
সাদুল্লাপুর, গাইবান্ধা।