শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি:
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের বীরদের স্মরণে নীলফামারীর সৈয়দপুরে স্কুল শিক্ষার্থীদের গ্রাফিতি অঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জুলাই আন্দোলনের বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মাসব্যাপী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই আয়োজন করা হয়। এতে আল ফারুক একাডেমির শিক্ষার্থীরা প্রথম স্থান অধিকার করেছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় উপজেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরের দেয়ালে এই গ্রাফিতি অঙ্কন করে। এসময় স্ব স্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাসহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে এর ফলাফল জানানো হয়।
আল ফারুক একাডেমির আঁকিয়ে শিক্ষার্থীরা জানায়, এই কাজে প্রাণের টান অনুভব করেছি। কারণ আমরা আন্দোলনের সাথে ছিলাম। শহীদদের স্মরণে কাজ করতে পেয়ে তৃপ্তি পাচ্ছি। মনের মাধুরি মিশিয়ে চব্বিশের বীরত্বগাঁথা সঠিকভাবে ফুটিয়ে তোলার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। যে কারণে আমাদের গ্রাফিতি প্রথম হয়েছে।
এতে দ্বিতীয় হয়েছে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ ও তৃতীয় হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। অংশ গ্রহণকারী অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হলো সৈয়দপুর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ, লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ, সানফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজ, লক্ষ্মণপুর স্কুল এন্ড কলেজ, রাজ্জাকিয়া গফুরিয়া দাখিল মাদরাসা।
শিক্ষার্থীরা জানায়, আমরা কাঁচা হাতে নিজেদের চোখে দেখা ও গড়া ইতিহাসকে এঁকে চলেছি। এটা এই প্রজন্মের ইতিহাস। জুলাইয়ের বীর শহীদ ও পঙ্গুত্ব বরণকারী হাজার হাজার মানুষের স্মৃতি বিজড়িত বিজয়ের ইতিহাস। ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাস। নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে পুরো জাতি জেগে উঠার ইতিহাস। দেয়ালে রং তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে দ্বিতীয় স্বাধীনতার স্মৃতিময় নানা চিত্র।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় প্রতিনিধি প্রিন্স ও সাকিব জানান, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা এই প্রতিযোগিতায় স্বতঃস্ফূর্ত অংশ গ্রহণ করেছে। শিক্ষকরাও বেশ আন্তরিক। ভালই লাগছে যে সবাই মিলে জুলাই আগস্টে ছাত্র জনতার আন্দোলনকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে ভূমিকা রাখছে। তারা শিক্ষার্থীদের ও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আল ফারুক একাডেমির প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, চব্বিশের চেতনা জাগ্রত রাখতে এই গ্রাফিতি অনন্য ভূমিকা রাখবে। আর এই কাজে শিক্ষার্থীরা যুক্ত হওয়ায় তাদের মাঝেও চেতনা জাগরুক হওয়াসহ প্রতিভা বিকাশে সহায়তা করবে। সম্মিলিত কাজে যোগ্যতা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রাখার পাশাপাশি তাদের সাহস ও কর্ম তৎপরতা বৃদ্ধি পাবে। তাই এধরণের কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে আমরা সব সময়ই আন্তরিক। প্রথম স্থান অধিকার করায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের প্রতি অভিনন্দন ও দোয়া রইল। সেই সাথে আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান তিনি।