ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় চলতি মৌসুমে আমনের পাশাপাশি বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে ‘সুগন্ধি কালিজিরা’ ধান। ইতিমধ্যে আবাদকৃত জমিতে ধানের শীষ বের হয়েছে। কোথাও পাকতে শুরু করেছে। নানা প্রতিকুলতা অপেক্ষা করে অন্যান্য ধানের পাশাপাশি এবার সুগন্ধি ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমন আবাদে প্রায় ৪ হাজার ৪শ ১২ হেক্টর জমিতে লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এরমধ্যে ১৯০ হেক্টর জমিতে কালিজিরা ধান আবাদ করা হয়। যা গত বছরের চাইতে ৪০ হেক্টর বেশী। আমন ধান রোপণের জন্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে ৯শ জন কৃষককে ৫ কেজি বীজ ধান, ১০ কেজি এমওপি এবং ১০ কেজি ডিওপি সার প্রণোদনা দেওয়া হয়।
সরেজমিনে পৌর শহরের তারাগন, দেবগ্রাম, উপজেলার আদমপুর, ধাতুরপহেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের পাশাপাশি সৌখিন কৃষকরা সুগন্ধি জাতের কালিজিরা ধান আবাদ করেছে। মাঠ জুড়ে এখন সুগন্ধি ধানের সমারোহ। বেশীভাগ জমিতে ধানের শীষ এসেছে। জমির পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পারকরছেন কৃষকরা।
কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এক সময় সুগন্ধি ধান বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে আবাদ হতো। কিন্তু এসব ধানের উৎপাদন কম হওয়ায় কৃষকরা বীজ আমদানির ওপর নিভর্রশীল হয়ে পড়ায় আবাদ কমে যায়। একমাত্র সৌখিন কৃষকরা সুগন্ধি কালিজিরাসহ নানা জাতের ধান ধরে রেখেছেন। কৃষি বিভাগের মাধ্যমে এ জাতের ধান আবাদে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করলে ধীরে ধীরে এ ধানের আবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে।
কৃষক মো: আমির হোসেন বলেন, এক সময় বাপ দাদা সুগন্ধি ধান আবাদ করতো। বীজসহ নানা কারণে ফলন কম হওয়ায় বেশ কয়েক বছর আবাদ করা হয়নি। কিন্তু এখন ভালো মানের বীজ পাওয়ায় গত ৪ বছর ধরে সুগন্ধি ধান আবাদ করছি। এ মৌসুমে ৮ বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করলেও এরমধ্যে ১ বিঘা জমিতে কালিজিরা ধান রয়েছে । বর্তমানে জমিতে ধানের শীষ এসেছে। এখন পযর্ন্ত ধান জমির অবস্থা বেশ ভালো আছে। ফলন ও বিক্রিতে দর ভালো পেলে আশা করছি লাভবান হবো।
কৃষক মো: আবুল আওয়াল বলেন ৬ বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করা হয়। এরমধ্যে ১ বিঘা জমিতে কালিজিরা ধান রয়েছে। কৃষি অফিস থেকে সার বীজ পেয়েছি। আমন আবাদের শুরুতে দফায় দফায় বৃষ্টি হওয়ায় পানি নিয়ে কোন চিন্তা করতে হয়নি। বর্তমানে জমিতে ধানে শীষ এসেছে। ক্ষেতের অবস্থা বেশ ভালো আছে। আশা করছি এই জমিতে সুগন্ধি ধান ৬ -৭ মণ পাব।
পথচারী মো: দেলোয়ার হোসেন বলেন, এখন চারদিকে আমন ধানের সমারোহ। রাস্তার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মাঠ থেকে সুগন্ধি গন্ধ আসছে। যা খুবই ভালো লাগে। আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: মাসুদ রানা বলেন, এ উপজেলায় প্রায় ৪ হাজার ৪শ ১২ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ করা হয়েছে।
এরমধ্যে ১৯০ হেক্টর জমিতে কালিজিরা ধান ও রয়েছে। এটি দেশীয় জাতের ধানের মধ্যে অন্যতম। এ ধান আবাদে উৎপাদন খরচ কম থাকায় আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। ধানের ফলন ভালো রাখতে কৃষকদেরকে সব সময় পরামর্শ দেওয়া হয়। মাঠের যে অবস্থা দেখা যায় তাতে মনে হয় বাম্পার ফলন হবে।







