সুন্দরবনের নদী ও খালের একসময় বিলুপ্তপ্রায় দৈত্যাকৃতির কচ্ছপ বাটাগুর বাসকা আবার প্রকৃতিতে ফিরছে। প্রজাতিটি একসময় ২৫–২৭ কেজি ওজনের বিশাল আকৃতির ছিল এবং স্থানীয়ভাবে ‘নদীর কাইট্টা কচ্ছপ’ নামেও ডাকা হতো। নির্বিচারে শিকার, নদী দখল, মাছ ধরার জাল ও দূষণের কারণে প্রজাতিটি বিলুপ্তির শীর্ষে চলে যায়।
২০০৮ সালে নোয়াখালী ও বরিশালের জলাশয়ে আটটি বাটাগুর বাসকা পাওয়া যায়। বন বিভাগ এগুলোকে গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে প্রজননের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। ২০১৪ সালের মধ্যে ৯৪টি ছানা জন্ম নিলে প্রজনন কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত করা হয়। পরে কচ্ছপ ও ছানাগুলো সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়।
কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, এখন পর্যন্ত ৫১৯টি ডিম থেকে ৪৩৩টি বাচ্চা ফুটেছে এবং বর্তমানে কেন্দ্রে ৪৫৭টি কচ্ছপ রয়েছে। ২০২৫ সালে তিনটি কচ্ছপ ৮২টি ডিম দিয়েছে, যেখান থেকে ৬৫টি বাচ্চা জন্ম নিয়েছে। বিশেষ ইনকিউভেশনের মাধ্যমে ডিমগুলো ফোটানো হয় এবং বাচ্চাগুলোকে ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য প্রস্তুত করা হয়।
বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের ডিএফও মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “বাটাগুর বাসকার পুনর্জীবন বাংলাদেশের সংরক্ষণ ইতিহাসে যুগান্তকারী ঘটনা। সঠিক পরিকল্পনা ও বিজ্ঞানভিত্তিক প্রচেষ্টায় হারিয়ে যাওয়া প্রজাতিকেও ফিরিয়ে আনা সম্ভব।”







