বাংলাদেশী রাজনীতিতে এক নতুন মোড়। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ভোটের মাঠ থেকে দূরে ছিলেন যে দুই প্রধান চরিত্র, এবার তাঁরা একসঙ্গে ফিরছেন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যা শুধু একটি নির্বাচন নয়—এ যেন এক ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন!
বেগম খালেদা জিয়া। দেশের রাজনীতিতে যাঁর উপস্থিতি মানেই এক বিশেষ বার্তা। ২০০৮ সালের পর এই প্রথম তিনি সরাসরি ভোটযুদ্ধে! ৯১ সাল থেকে তাঁর পরাজয়ের কোনো রেকর্ড নেই, পাঁচ আসনে লড়ে সব কটিতেই জিতে সরকার গঠন করেছেন। এবারও তিনি লড়ছেন তাঁর ঐতিহ্যবাহী তিন আসনে: দিনাজপুর-৩, বগুড়া-৭, ও ফেনী-১। এই তিন আসন থেকে তাঁর লড়াই শুধু ক্ষমতার নয়, তাঁর মর্যাদা ও জনপ্রিয়তার প্রতীক।
অন্যদিকে, এই নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক। তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, তারেক রহমান। প্রায় দুই দশক ধরে দল পরিচালনায় থাকলেও, এই প্রথম তিনি সরাসরি ভোটের মাঠে প্রার্থী হচ্ছেন! অক্টোবরে বিবিসি বাংলার এক সাক্ষাৎকারে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন— “জি, ইনশাআল্লাহ।” সেই প্রতিশ্রুত “ইনশাআল্লাহ” এখন বাস্তবে। তিনি লড়বেন বগুড়া-৬ আসন থেকে, যে আসনটি তাঁর মা খালেদা জিয়ার দুর্গ বলে পরিচিত।
২০০৮ সালের সেই দিন, যেদিন তিনি দেশ ছেড়েছিলেন… দেখতে দেখতে প্রায় দেড় যুগ কেটে গেল! দীর্ঘ এই সময় তিনি ছিলেন লন্ডনে। কিন্তু এবার গুঞ্জন সত্যি। খুব দ্রুতই যুক্তরাজ্য থেকে সৌদি আরব হয়ে দেশে ফিরছেন তারেক রহমান! এই প্রত্যাবর্তন শুধু একটি নেতার ফেরা নয়, এটি বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে এক নতুন উদ্দীপনা, এক নতুন প্রেরণা। কিছুদিন আগে তাঁর স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানও ঢাকায় এসেছিলেন।
একদিকে কারামুক্তির পর জননেত্রীর ফেরা, অন্যদিকে দেড় যুগের নির্বাসন ভেঙে তারুণ্যের প্রতীক তারেক রহমানের সরাসরি ভোটের মাঠে নামা! মা ও ছেলের এই যুগলবন্দী বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের চিত্রকে আমূল বদলে দিতে পারে। দীর্ঘ আইনি ও রাজনৈতিক বাধা পেরিয়ে এই দুই প্রধান নেতা যখন ভোটের ময়দানে, তখন দেশের প্রতিটি আসনে তার ঢেউ লাগবেই।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখন শুধু সরকার গঠন বা পরিবর্তনের লড়াই নয়; এটি এখন খালেদা ও তারেকের প্রত্যাবর্তনের গল্প। রাজনীতি, আবেগ আর ইতিহাসের এক অভূতপূর্ব মিশ্রণ। দেশের জনগণ কী রায় দেবে? অপেক্ষায় থাকুন ২০২৬ সালের সেই মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য।







