আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের ফলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চলছে। মার্চ মাসে যুদ্ধবিরতি প্রত্যাহারের পর থেকে হাজার হাজার ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে আবাসিক এলাকা, স্কুল, হাসপাতাল ও মানবিক সেবাকেন্দ্রও রয়েছে।
নতুন স্যাটেলাইট চিত্র ও ভেরিফায়েড ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, গাজার বিভিন্ন এলাকায় টাওয়ার ব্লক ও বহুতল ভবনগুলো পরিকল্পিত বিস্ফোরণে ধ্বংস করা হচ্ছে। ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, এসব ভবন “হামাসের সন্ত্রাসী অবকাঠামো” হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। তবে অনেক অক্ষত ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ভবনও ধ্বংস করা হয়েছে।
একাধিক মানবাধিকার সংস্থা ও আইন বিশেষজ্ঞের মতে, দখলকৃত অঞ্চলে এভাবে অবকাঠামো ধ্বংস করা চতুর্থ জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী অবৈধ এবং তা যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে। আইন অনুযায়ী, শুধুমাত্র সরাসরি সামরিক প্রয়োজন ছাড়া বেসামরিক সম্পদ ধ্বংস করা নিষিদ্ধ।
ইসরায়েল বর্তমানে গাজা জুড়ে ‘নিরাপত্তা করিডর’ ও ‘বাফার জোন’ গড়ে তুলছে। এই করিডরগুলো গাজার বিভিন্ন অঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলছে এবং আশপাশের ভবনগুলো পরিকল্পিতভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিছু এলাকা, যেমন রাফাহ, খুজাহ ও আবাসান আল-কাবিরা—সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
গাজায় ভবন ভাঙার জন্য ইসরায়েলের সামাজিক মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখা গেছে। ডি-৯ বুলডোজারসহ বিভিন্ন ভারী যন্ত্রপাতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ধ্বংসযজ্ঞের ফলে লক্ষাধিক মানুষ গৃহহীন হয়েছে। অনেক পরিবার, যাদের ঘরবাড়ি ছিল কেবল কিছু মাস বা বছর আগে নির্মিত, এখন উদ্বাস্তু শিবিরে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
“আমি নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম। এখন শুধু ধ্বংস আর ধুলাবালি,”—বলেন রাফাহ শহরের এক বাসিন্দা।