বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে চারটি অগ্রাধিকারে জোর দিচ্ছে সরকার—এ কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
রাজধানীর বিনিয়োগ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এই সরকার একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন হলেও আমরা বিনিয়োগের গতি ধরে রাখতে চাই। বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা ও আশ্বাস দেওয়ার জন্য আমরা চেষ্টা করছি, যেন বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ নিরাপদ ও লাভজনক হয়।
তিনি জানান, সরকারের প্রধান চার অগ্রাধিকার হলো— ১. উচ্চ-প্রভাবসম্পন্ন বিনিয়োগ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন, ২. ওয়ান-স্টপ সার্ভিস সম্প্রসারণ ও মানোন্নয়ন, ৩. বিনিয়োগকারীদের সমস্যার দ্রুত সমাধান, এবং ৪. বড় বিনিয়োগের একটি শক্তিশালী পাইপলাইন তৈরি।
বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫ প্রসঙ্গে আশিক চৌধুরী বলেন, সরকার পরিকল্পিত লক্ষ্যের চেয়েও বেশি সফল হয়েছে। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বিনিয়োগকারী, উন্নয়ন সহযোগী এবং অংশীজনদের কাছ থেকে অত্যন্ত ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। অনেকেই নবায়নযোগ্য জ্বালানি, তথ্য প্রযুক্তি, অবকাঠামো, উৎপাদন এবং স্বাস্থ্যসেবায় বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, সামিটে ৫০টি দেশের ৪১৫ জন বিদেশি প্রতিনিধি অংশ নেন এবং সম্মেলন থেকে ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা সমমূল্যের বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে। আরও কিছু প্রস্তাব এখন প্রক্রিয়াধীন।
বিডা চেয়ারম্যান বলেন, এই সামিট প্রমাণ করেছে যে, বৈশ্বিক বিনিয়োগকারী সমাজ বাংলাদেশকে একটি প্রতিশ্রুতিশীল এবং নির্ভরযোগ্য গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করছে। আমাদের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ এবং বিশ্বমানের অবকাঠামো বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে পেরেছি।
তিনি জানান, এখন সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হলো সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা ও বিনিয়োগ চক্র অনুযায়ী পার্সোনালাইজড সহায়তা প্রদান করা।
বিনিয়োগকারীরা শুধু ব্যবসায়িক অংশীদার নয়, বরং উন্নয়নের সহযাত্রী। তাই প্রত্যেকের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সামিটের প্রতিটি সেশনের আলোচ্য বিষয় ও পরামর্শ নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং তা সরকারের নির্ধারিত খাতগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে দেখছেন বিডা প্রধান । অগ্রাধিকার খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে—নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও সবুজ প্রবৃদ্ধি, ডিজিটাল অর্থনীতি ও প্রযুক্তি রূপান্তর, উন্নত টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক, স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ শিল্প, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ ও খাদ্য মূল্য শৃঙ্খলা।