বাংলাদেশের আলোকচিত্র জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র চঞ্চল মাহমুদ আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার (২০ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই গুণী আলোকচিত্রী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।
তার স্ত্রী রায়না মাহমুদ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, চঞ্চল মাহমুদ দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তিনি মারা যান।
চঞ্চল মাহমুদের মরদেহ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য শনিবার দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে নেওয়া হবে। বাদ জোহর সেখানে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
বাংলাদেশে আধুনিক ফ্যাশন ফটোগ্রাফির অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন চঞ্চল মাহমুদ। তার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল আলোকচিত্রাচার্য মঞ্জুর আলম বেগের শিষ্য হিসেবে। কিন্তু খুব দ্রুতই নিজ গুণে তিনি হয়ে ওঠেন ফ্যাশন ও আর্ট ফটোগ্রাফির পরিচিত নাম।
শুধু নিজে ছবি তোলাই নয়—আলোকচিত্রকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে আগ্রহীদের গড়তেও নিয়েছিলেন উদ্যোগ। তার প্রতিষ্ঠিত ‘চঞ্চল মাহমুদ স্কুল অব ফটোগ্রাফি’ থেকে তৈরি হয়েছে শত শত শিক্ষার্থী, যারা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আলোকচিত্রী হিসেবে সফল।
চঞ্চল মাহমুদের ক্যামেরা যেমন ধরা পড়েছে বাংলাদেশের জীবন, প্রকৃতি ও মানুষের গল্প, তেমনি তার লেন্সে উঠে এসেছে ফ্যাশন ও সৃজনশীলতার নতুন মাত্রা। একাধিক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া, দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করা এবং মিডিয়ার বিভিন্ন খাতে আলোকচিত্রের গুণগত মান বৃদ্ধিতে ছিল তাঁর অবিস্মরণীয় অবদান।
চঞ্চল মাহমুদের মৃত্যুতে দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন স্তরের আলোকচিত্রী ও সংস্কৃতিকর্মীরা তাকে স্মরণ করছেন ভালোবাসা ও শ্রদ্ধায়।
তিনি শুধু একজন আলোকচিত্রী ছিলেন না, ছিলেন একজন অনুপ্রেরণাদাতা ও শিক্ষক। তার অবদান বাংলাদেশে আলোকচিত্রকে নিয়ে গেছে এক নতুন উচ্চতায়।