আহসান হাবীব রানা, ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আল-কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস।
শনিবার (১৯ জুলাই) ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই মরলো কেনো, প্রশাসন জবাব দে’, ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘তুমি কে, আমি কে—সাজিদ সাজিদ’, ‘ভুয়া ভুয়া প্রশাসন’, ‘ধইনঞ্চা ধইনঞ্চা প্রশাসন’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের দাবি ন্যায্য উল্লেখ করে এর দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
সাজিদের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসজুড়ে বইছে উত্তেজনা। রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচারের দাবিতে সকাল থেকেই বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভে অংশ নেয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ থেকে কয়েকটি দাবি জানান, সাজিদের মৃত্যুর তদন্ত দ্রুত সময়ে সম্পন্ন করে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ, ক্যাম্পাস সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা, ক্যাম্পাসের চারপাশে পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তাবেষ্টিত বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ, ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত স্ট্রিট লাইট স্থাপন ও বহিরাগত প্রবেশ নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন সংহতি প্রকাশ করে অংশ নিয়েছেন।
এর আগে সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল মাঠে শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে সমবেত হয় শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুর থেকে সন্ধ্যা ৬ টা ২০ এর দিকে সাজিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের নাক-মুখে রক্ত, কব্জি ও হাঁটুতে আঘাতের চিহ্ন দেখে শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন—এ মৃত্যু কোনোভাবেই স্বাভাবিক নয়।
সাজিদের বাবা ও সহপাঠীদের দাবি, সাজিদ পানিতে ডুবে মারা গেছেন, এটি তারা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। তাদের আশঙ্কা, ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে।