Joypurhat District Representative:
জয়পুরহাট, খেতলাল (১৭ জুলাই ২০২৫) — সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ভিডব্লিউবি (Vulnerable Women Benefit)-এর উদ্দেশ্য অসচ্ছল, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্ত নারীদের সহায়তা প্রদান হলেও জয়পুরহাট জেলার খেতলাল উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নে এ কার্ড বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকৃত অসহায়দের বাদ দিয়ে স্বচ্ছ ও আর্থিকভাবে স্বনির্ভর পরিবারের নারীরা মিথ্যা তথ্য দিয়ে এই কার্ডের সুবিধা ভোগ করছেন।
২০২৬-২৭ অর্থবছরের ভিডব্লিউবি (Vulnerable Women Benefit) কর্মসূচির তালিকায় নিয়মবহির্ভূতভাবে পুরাতন ভাতাভোগী ও সচ্ছল পরিবারের সদস্যদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য নামসমূহ: ক্রমিক নং (৫): রোকসানা বেগম ক্রমিক নং (৮): রাজিয়া সুলতানা এছাড়া: মাহমুদা, সোহাগী, রিনানা সিমা মৌসমি, পিয়ারা বেগম, রোজিনা, আছমা একই বাড়িতে একাধিক কার্ডসহ প্রাই ৪৫ জন পূর্বে ভাতাভোগী ছিলেন এবং অনেকেই সচ্ছল (তালিকায় চিহ্নিত) আছেন৷
এই তালিকা অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, একই ব্যক্তি বারবার সরকারি ভাতার সুবিধা পাচ্ছেন, যেখানে প্রকৃত অসহায় ও নতুন আবেদনকারীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।
বিশেষ করে অনলাইনে আবেদন করার সময় আয়, পেশা ও পারিবারিক তথ্য জালিয়াতির মাধ্যমে এমন ব্যক্তিরা উপকারভোগী হিসেবে তালিকাভুক্ত হচ্ছেন, যাদের নিজস্ব ঘরবাড়ি, জমি ও আয়ক্ষম স্বামী বা সন্তান রয়েছে।
এতে করে এলাকার প্রকৃত দরিদ্র, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত ও নিরাশ্রয় নারীরা এই জরুরি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
ভিডব্লিউবি কার্ডের শর্তাবলী স্পষ্ট হলেও বাস্তবে তার ব্যত্যয় ভিডব্লিউবি কার্ড প্রদানের জন্য সরকারের নির্ধারিত কিছু যোগ্যতা ও শর্ত রয়েছে: বয়স হতে হবে ২০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে; আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে হবে;
অসচ্ছলতা, কর্মক্ষম সদস্যের অনুপস্থিতি এবং অন্য কোনো সরকারি সুবিধাভোগী না হওয়া—এসব গুরুত্বপূর্ণ শর্ত; একটি পরিবারে মাত্র একজন কার্ডধারী থাকতে পারবেন।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, “আমরা যাদের এই কার্ড পেতে দেখছি, তারা অনেকেই মোটরসাইকেলে ঘুরেন, দোকান চালান বা তাদের ঘরে উপার্জনক্ষম স্বামী রয়েছেন। অথচ এক পাশে বিধবা রিজিয়া বেগম, যিনি দু’বেলা খেতে পান না—তিনি আজও তালিকায় নেই।”
আব্দুল হান্নান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “গরিব-অসহায় মানুষের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত চাল যদি সচ্ছল পরিবারদের হাতে যায়, তা হলে এটি চরম অন্যায়। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা এই সাহায্য অপব্যবহারের বিরুদ্ধে আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”
একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউনিয়ন সদস্য জানান, কিছু সুবিধাবাদী ব্যক্তির তথ্য বিকৃতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার এর পেছনে কাজ করছে।
স্বচ্ছ তদন্ত ও পুনরায় যাচাইয়ের দাবি এ অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকারি তদন্ত ও তালিকা পুনরায় যাচাইয়ের দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। তারা মনে করছেন, স্থানীয় প্রশাসন যদি মাঠপর্যায়ে যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত অসহায়দের নির্বাচন করতো, তাহলে এমন অনিয়ম হতো না।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ আল জিনাত বলেন পূর্বে যারা ভাতা ভোগী হয়েছেন যারা স্বচ্ছ পরিবার ভুল ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে তালিকাভুক্ত হয়েছেন৷ প্রয়োজনে যাচাই-বাছাই করা হবে৷