জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্মকর্তাদের চলমান আন্দোলনের পেছনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী কিছু ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর ইন্ধন থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অর্থ উপদেষ্টার ভাষ্য, “এনবিআরে দীর্ঘদিন নানা ধরনের অসঙ্গতি ছিল। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব ছিল। আগের সরকারের সময়ে কিছু ব্যবসায়ী সুযোগ-সুবিধা পেতেন, আর ভালো ব্যবসায়ীরা বঞ্চিত হতেন। তাই আমি অনুমান করছি, এই সংস্কারের প্রতিবাদে তাদেরই কিছু স্বার্থ জড়িত থাকতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “সংস্কার হলে এনবিআরের কর্মকর্তাদের ক্যারিয়ারে কোনো ক্ষতি হবে না, বরং স্বতন্ত্র ডিভিশন হিসেবে তাদের মর্যাদা ও পদোন্নতির সুযোগ আরও বাড়বে। হঠাৎ কেন এত চটে গেলেন কর্মকর্তারা? নিশ্চয়ই এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে।”
অন্যদিকে, এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি পৃথক বিভাগ গঠনের সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। বুধবার বিকালে আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আলোচনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাসান মুহাম্মদ তারেক রিকাবদার বলেন, “সরকারের অবস্থান বদলে গেছে। একদিকে বলা হচ্ছে, এনবিআর বিলুপ্ত করা হবে না; আবার উপদেষ্টা গণমাধ্যমে বলছেন, বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ গঠন করা হবে। এটি প্রতিশ্রুতির সঙ্গে একধরনের প্রহসন।”
তিনি বলেন, “আন্দোলনের পেছনে ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর ইন্ধন রয়েছে—এ ধরনের মন্তব্য আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এনবিআরের তিন বিভাগ—আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাটের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। মাঠপর্যায়ের তথ্য না জেনেই এ ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে।”
অর্থ উপদেষ্টা পূর্বের আলোচনাকে ফলপ্রসূ বললেও, ঐক্য পরিষদের দাবি, তাদের মাত্র ১০ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছিল এবং আলোচনার বিষয়ে কোনও লিখিত আমন্ত্রণপত্র দেওয়া হয়নি। তারেক রিকাবদার বলেন, “যে নোটিশের কথা বলা হচ্ছে, সেটি বিতর্কিত কমিটির এক সদস্যের স্বাক্ষরিত এবং একদিন আগের তারিখে জারি—এটি প্রকৃতপক্ষে একটি আইওয়াশ।”
ঐক্য পরিষদ ঘোষণা দিয়েছে, তাদের চার দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে এনবিআর বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত বাতিল, এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ, কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারে নিষেধাজ্ঞা এবং আলাদা কমিশন গঠনের প্রতিশ্রুতি। আগামী ২৮ জুন থেকে লাগাতার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচিরও ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এনবিআর সংস্কারের লক্ষ্য হচ্ছে রাজস্বনীতি ও বাস্তবায়নের কাজ আলাদা করা, যাতে কার্যক্রম আরও দক্ষ হয়। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। তবে সরকার আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনতে আগ্রহী বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, এনবিআর সংস্কার ঘিরে চলমান অস্থিরতা দেশের রাজস্ব ব্যবস্থাপনা এবং বন্দর কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট মহলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে, আন্দোলন দীর্ঘ হলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে।
ঢাকা, ২৫ জুন:
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্মকর্তাদের চলমান আন্দোলনের পেছনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী কিছু ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর ইন্ধন থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অর্থ উপদেষ্টার ভাষ্য, “এনবিআরে দীর্ঘদিন নানা ধরনের অসঙ্গতি ছিল। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব ছিল। আগের সরকারের সময়ে কিছু ব্যবসায়ী সুযোগ-সুবিধা পেতেন, আর ভালো ব্যবসায়ীরা বঞ্চিত হতেন। তাই আমি অনুমান করছি, এই সংস্কারের প্রতিবাদে তাদেরই কিছু স্বার্থ জড়িত থাকতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “সংস্কার হলে এনবিআরের কর্মকর্তাদের ক্যারিয়ারে কোনো ক্ষতি হবে না, বরং স্বতন্ত্র ডিভিশন হিসেবে তাদের মর্যাদা ও পদোন্নতির সুযোগ আরও বাড়বে। হঠাৎ কেন এত চটে গেলেন কর্মকর্তারা? নিশ্চয়ই এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে।”
অন্যদিকে, এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি পৃথক বিভাগ গঠনের সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। বুধবার বিকালে আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আলোচনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাসান মুহাম্মদ তারেক রিকাবদার বলেন, “সরকারের অবস্থান বদলে গেছে। একদিকে বলা হচ্ছে, এনবিআর বিলুপ্ত করা হবে না; আবার উপদেষ্টা গণমাধ্যমে বলছেন, বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ গঠন করা হবে। এটি প্রতিশ্রুতির সঙ্গে একধরনের প্রহসন।”
তিনি বলেন, “আন্দোলনের পেছনে ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর ইন্ধন রয়েছে—এ ধরনের মন্তব্য আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এনবিআরের তিন বিভাগ—আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাটের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। মাঠপর্যায়ের তথ্য না জেনেই এ ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে।”
অর্থ উপদেষ্টা পূর্বের আলোচনাকে ফলপ্রসূ বললেও, ঐক্য পরিষদের দাবি, তাদের মাত্র ১০ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছিল এবং আলোচনার বিষয়ে কোনও লিখিত আমন্ত্রণপত্র দেওয়া হয়নি। তারেক রিকাবদার বলেন, “যে নোটিশের কথা বলা হচ্ছে, সেটি বিতর্কিত কমিটির এক সদস্যের স্বাক্ষরিত এবং একদিন আগের তারিখে জারি—এটি প্রকৃতপক্ষে একটি আইওয়াশ।”
ঐক্য পরিষদ ঘোষণা দিয়েছে, তাদের চার দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে এনবিআর বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত বাতিল, এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ, কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারে নিষেধাজ্ঞা এবং আলাদা কমিশন গঠনের প্রতিশ্রুতি। আগামী ২৮ জুন থেকে লাগাতার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচিরও ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এনবিআর সংস্কারের লক্ষ্য হচ্ছে রাজস্বনীতি ও বাস্তবায়নের কাজ আলাদা করা, যাতে কার্যক্রম আরও দক্ষ হয়। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। তবে সরকার আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনতে আগ্রহী বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, এনবিআর সংস্কার ঘিরে চলমান অস্থিরতা দেশের রাজস্ব ব্যবস্থাপনা এবং বন্দর কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট মহলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে, আন্দোলন দীর্ঘ হলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে।